এইচএসসিতে পড়া অবস্থায় বিয়ে করেছেন মাহাবুব আলম মানিক ও শাকুরা মুহসিনা সুপ্রীম। দুইজনই এখন উচ্চশিক্ষার জন্য পরীক্ষা দিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে, পেয়েছেন সাফল্যও। এখন পর্যন্ত প্রকাশিত ফলাফলে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি ইউনিটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তারা। কীভাবে প্রস্তুতি নিয়ে এমন সাফল্য পেয়েছেন, দ্যা ডেইলি পাবলিকিয়ানকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন সে গল্পই।
মাহাবুব আলম মানিক জানান, স্বামী-স্ত্রী দুইজন পড়াশোনা করেছেন একই টেবিলে। একজনের নোট শেয়ার করে পড়তেন আরেকজন। এর কারণে প্রকাশিত রেজাল্টগুলোতে দেখা যায় দুজনের অবস্থানও খুব কাছাকাছি। তাদের লক্ষ্য ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশিত ফল আশানুরূপ না হওয়ায় অপেক্ষায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফলের।
এখন পর্যন্ত প্রকাশিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, মানিক ২০২৩-২৪ সেশনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৭২তম আর শাকুরা একই ইউনিটে ১৮২তম স্থান অধিকার করেছেন। এছাড়াও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সি’ ইউনিটে মানিক ৭১৫তম ও সাকুরা ৪৬৫তম; ‘বি’ ইউনিটে মানিক ১৫৯তম ও সাকুরা ২৮৫তম; ‘ই’ ইউনিটে মানিক ৯ম ও সাকুরা ৬২তম হয়ে ভর্তির সুযোগ পান। এছাড়াও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন এই দম্পতি।
দুইজনের গ্রামের বাড়ি রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ জেলায়। তাদের স্কুল ভিন্ন হলেও উচ্চ মাধ্যমিক একসাথে রাজশাহী কলেজ থেকে পাস করেন মানবিক বিভাগ থেকে। মাহাবুব আলম মানিকের স্কুল ছিল কালীগ্রাম দোডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয় ও শাকুরা মুহসিনা সুপ্রীমের স্কুল ছিল রাজশাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
দুইজন কীভাবে ভর্তি প্রস্তুতি নিয়েছেন জানতে চাইলে মানিক জানান, আমাদের বিয়ের এক বছর হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষে থাকাকালীন সময়ে আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। আমরা একসঙ্গে বসে পড়াশোনা করতাম। এক জনের নােট আরেকজন শেয়ার করে পড়তাম। একজনের পড়া আরেকজনকে ধরতাম। এভাবেই আমরা দুইজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তুতি নিয়েছি।
শাকুরা মুহসিনা সুপ্রীম বলেন, আমাদের পড়ার জন্য দুজনের ভিন্ন ভিন্ন টেবিল থাকলেও একই টেবিলে বসে পড়েছি। একই শিক্ষকের কাছে পড়েছি আমরা। যেটা সে পড়েছে সেটা আমিও পড়েছি। আর যেটা সে পড়েনি সেটা আমিও পড়িনি— নিয়মটা একইরকম ছিল। যেহেতু আমরা পড়াশোনা একই নিয়মে করেছি, তাই আমাদের সিরিয়ালটাও কাছাকাছি এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছুদের পরামর্শ দিয়ে এই দম্পতি বলেন, নিজের জন্য কোনটা ভালো, এটা বুঝে প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা বিয়ে করে (ভর্তি পরীক্ষায়) সফল, তাই বলে সবাই যে বিয়ে করে সফল হবেন বিষয়টি এমন না। আমরা আমাদের মতো পড়াশোনা করেছি, প্রস্তুতি নিয়েছি। আপনাদের জন্য যেটা ভালো মনে করবেন, সেভাবে প্রস্তুতি নেবেন।