বাকৃবিতে সপ্তাহে প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকার সিগারেট বিক্রি হয়


বাকৃবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) সিগারেটের ব্যবসা দিন দিন বাড়ছে। আবাসিক হল ও আশপাশের দোকানগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ৮৮ হাজার টাকার সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের হিসেবে তা দাঁড়ায় প্রায় ৬ লাখ ১৬ হাজার টাকায়।

মাঠপর্যায়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের বিভিন্ন দোকান, টং ও হলের ক্যান্টিনগুলোতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিগারেট বিক্রি হয়। আবাসিক হলগুলোতে সিগারেটের প্রধান ক্রেতা শিক্ষার্থীরা। হলের বাইরের দোকানগুলোতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বহিরাগতদের ক্রেতা হিসেবে দেখা যায়। বিশেষত ক্লাস শেষ হওয়ার পর বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এসব দোকানে সিগারেটের জমজমাট কেনাবেচা চলে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেদের ৯টি আবাসিক হলের ক্যান্টিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, হলগুলোতে দৈনিক প্রায় ২৩ হাজার টাকারও বেশি সিগারেট বিক্রি হয়। শিক্ষার্থী এবং হলের স্টাফরা ক্যান্টিন থেকে ওই সিগারেট কিনে থাকে। 

কয়েকটি আবাসিক হলের ক্যান্টিনের কর্মচারীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, কিছু শিক্ষার্থী যদি ১০ টাকা খাবারের পিছনে খরচ করে, তার বিপরীতে ৩০ টাকা খরচ করে সিগারেটের পিছনে। ক্যান্টিনে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় সিগারেট।

আরো খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বারের মোড়ে ২৪ টি টং ও দোকানে সিগারেট বিক্রি হয়। দোকানগুলোতে দৈনিক গড়ে প্রায় ৩৭০০০ টাকার সিগারেট বিক্রি হয়। অন্যদিকে কামাল রঞ্জিত মার্কেটের ৫ টি  দোকানে দৈনিক গড়ে প্রায় ৬০০০, ফসিলের মোড়ের ৫ টি দোকানে দৈনিক গড়ে প্রায় ১২০০০, নদীর পাড়ে দৈনিক ১০০০ এবং শেষ মোড়ের কয়েকটি দোকানে দৈনিক গড়ে সর্বমোট ৯০০০ টাকার সিগারেট কেনাবেচা হয়ে থাকে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পোল্ট্রির মোড়, ডেইরি ফার্ম, ফিসারিজ মোড়ের দোকানগুলোতে সিগারেট বিক্রি হলেও শিক্ষার্থীদের সেখানে আনাগোনা কম থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসিলের মোড়ের একজন দোকানদার বলেন, বর্তমানে তিনজন ডিলার ক্যাম্পাসে সিগারেট সরবরাহ করে থাকে। তবে সিগারেটের দাম বৃদ্ধির পর থেকে সিগারেট বিক্রি কিছুটা কমে গেছে।

এ বিষয়ে বাকৃবির হেলথ কেয়ার সেন্টারের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার কাম পাথোলজিস্ট ডা. আবুল কালাম মোহাম্মদ আজাদ বলেন, ধূমপান আমার মতে শুধু এক ধরনের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। ধূমপান একাধারে শারীরিক, মানসিক, আর্থিক সকল ধরনের ক্ষতির কারণ। ধূমপান আসক্তি ধীরে ধীরে মানুষকে অন্যান্য মাদকদ্রব্যের দিকে ধাবিত করে। যেহেতু সিগারেট বিক্রি সরকারিভাবে নিষিদ্ধ নয়, তাই এগুলোর বিক্রি বন্ধ করা সম্ভব না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত শিক্ষার্থীদের মাঝে ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরা, ধূমপান না করতে মোটিভেট করা, ধূমপানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা চালানো।

নবীনতর পূর্বতন