অপকর্ম ঢাকতে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ সেজে স্মারকলিপি দিলেন ছাত্রদলের পোস্টেড নেতাকর্মীরা


ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে চাঁদাবাজি ও হামলার অভিযোগ ঘিরে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ঘটনাটার মূল অভিযুক্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল নিজের অপকর্ম ঢাকতে দলীয় নেতাকর্মীদের ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ দিয়ে ভুক্তভোগী ডাক্তারের শাস্তির দাবিতে মেডিকেল কলেজটির পরিচালকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর মিডফোর্ড এলাকায় মেডিলাইফ হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করেন জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহরিয়ার হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক, মোজাম্মেল মামুন ডেনি, সদস্য মাইদ, সাদমান সাম্যসহ ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী। এরপর তারা হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক এবং আইসিইউ বিভাগের প্রধান ডা. মোশাররফ হোসেনকে মারধর করেন ও ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তাকে বাসা থেকে তুলে আনার হুমকিও দেন বলে অভিযোগ।

তবে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান হিমেল এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি ঘটনাটিকে ‘মানহানিকর অপপ্রচার’ বলে দাবি করে ডা. মোশাররফকে তার মামার হাসপাতাল দখলের চেষ্টাকারী হিসেবে আখ্যা দেন। 

এরই প্রেক্ষিতে বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ পরিচয়ে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের পরিচালকের কাছে ডা. মোশাররফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তবে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস-এর অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্মারকলিপিদাতারা সবাই ছাত্রদলের পোস্টেট নেতাকর্মী ও অনুসারী।

স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাখাওয়াত হোসেন সাকিব, সদস্য ছোটন মিয়া, আরমান হোসেন আকাশ, আবু সালেহ মোহাম্মদ ফাহাদ, রাহাত, তারিকুল ইসলাম তারেক, ইনজামামুল হোসেন শিহাবসহ আরও অনেকে। এছাড়া ২২-২৩ সেশনের আফরান রেহমান শাহাদাত এবং ২৩-২৪ সেশনের ইফতে হাসান ইমন, শাকিরুল ইসলাম, প্রান্ত চৌধুরী ও স্বপন পালের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়। উপস্থিত কয়েকজনের পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। যদিও এদের অনেকে কমিটির সদস্য না হলেও, তাদেরকে ছাত্রদলের বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও শোডাউনে নিয়মিত অংশ নিতে দেখা যায়।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি “জোরপূর্বক অন্যের সম্পত্তি দখল করলেন ন্যাশনালের ডাক্তার মোশাররফ হোসেন” শিরোনামে কয়েকটি পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর আগে অভিযুক্ত ডাক্তার নিজের অপকর্ম ডাকতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল এর বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির যে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছেন তা নিঃসন্দেহে তার বাক্তি স্বার্থ হাসিলের নগ্ন চেষ্টা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সক্রিয় ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন ও বিক্ষুব্ধ।’

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, “গত ৪ এপ্রিল অভিযুক্ত মোশাররফ হোসেন ৪ জন অংশীদারের চিকিৎসা সংক্রান্ত সরঞ্জাম লুট করে নিয়ে যান । এ ঘটনায় মেহেদী হাসান হিমেলের মামা ডাক্তার হারিসের অনুরোধে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় গেলে তিনি হিমেলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলেন।”

নবীনতর পূর্বতন