বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধে টাস্কফোর্সের সুপারিশ



ছাত্ররাজনীতির কারণে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মারামারি-হানাহানি লেগেই থাকে। ঝরেছে অনেক তরুণ তাজাপ্রাণও। বিঘ্নিত হয় শিক্ষার পরিবেশ। বিদ্যমান এ ছাত্ররাজনীতি ক্যাম্পাসগুলোতে থাকবে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ছাত্ররাজনীতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

কেউ বলছেন ছাত্ররাজনীতি থাকা উচিত, কেউ আবার বন্ধের পক্ষে। আরেক পক্ষ দাবি তুলেছেন, লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধ করে ছাত্ররাজনীতিতে সংস্কার আনতে হবে। এমন প্রেক্ষাপটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে সুপারিশ করেছে ‌‘অর্থনৈতিক সংস্কারবিষয়ক টাস্কফোর্স’।

সুপারিশে বলা হয়েছে, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থিতিশীল শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা উচিত। গত ৩০ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে এ প্রতিবেদন দেন টাস্কফোর্সের সদস্যরা। ‘অর্থনীতির পুনর্কৌশলীকরণ এবং ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই উন্নয়নের জন্য সম্পদ সহজলভ্যকরণ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে শিক্ষা সংস্কারে বিশদভাবে সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একক ভর্তি পরীক্ষা চালুর সুপারিশও করা হয়েছে। এ পরীক্ষার প্রণালী তৈরি করতে হবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এসএটি ও জিআরইর ওপর ভিত্তি করে।

তাছাড়া টাস্কফোর্স দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা অপরিহার্য বলে মনে করে। এজন্য শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষার মান, অবকাঠামো ও সমতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে সরকারি ও বেসরকারি খাত এবং এনজিওগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার বলেও অভিমত দিয়েছে।

শিক্ষাখাত সংস্কারে আরও যত সুপারিশ

>> শিক্ষাদান ও শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতির হালনাগাদ করা; গ্রন্থাগার, ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষ, খেলার মাঠ ও স্যানিটারি টয়লেটসহ সুযোগ-সুবিধার ব্যাপক চাহিদা মূল্যায়ন করতে হবে।

>> তথ্যপ্রযুক্তি সম্প্রসারণের জন্য অতিরিক্ত সম্পদ বরাদ্দ দিতে হবে, শিক্ষার্থীদের আর্থিক বাধা হ্রাস ও পুষ্টি নিশ্চিতে স্কুলে খাবারের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে।

>> আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভালো অবস্থান নিশ্চিতে কিছু পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়কে একীভূত করার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।

>> বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইংরেজি পাঠ্যপুস্তক ও শ্রেণিকক্ষে ইংরেজিতে শিক্ষা দিতে সরকারের উৎসাহিত করা উচিত। যাতে করে বিদেশি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আকৃষ্ট হন।

>> পরীক্ষায় অটোপাসের বিধান বাতিল করা উচিত। কোনো পরিস্থিতিতে কোনো শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় অটোপাসের সুবিধা দেওয়া উচিত নয়। পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন (সংশোধিত), ১৯৯২ অনুযায়ী প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের ৩-১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা উচিত।

>> সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে কেবল যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ করতে হবে। শিক্ষকদের কর্মক্ষমতা মূল্যায়নের জন্য মানসম্মত ব্যবস্থা চালু করা উচিত।

Cookie Consent
We serve cookies on this site to optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.