ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে চলছে ‘কিলার হাসিনা’ ভিডিও প্রদর্শন

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে চলছে ‘কিলার হাসিনা’ ভিডিও প্রদর্শন

১৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে আয়োজন হতো নানান আয়োজন। তবে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর এবার নেই কোন আয়োজন। বরং ৩২ নাম্বারে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনে গানের আয়োজন করা হয়েছে।

এসময় সাউন্ড বক্সের মাধ্যমে 'কিলার হাসিনা', 'ভালো হয়ে যাও মাসুদ তুমি',সহ বিভিন্ন গান বাজানো ও ডিজিটাল স্ক্রিনে হিন্দি গানের ভিডিও প্রদর্শন করা হচ্ছে। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) জুমার নামাজের জন্য বিরতির পর দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে গান চালু করা হয়।

প্রথম গানটি ছিলো ভারতীয় চলচ্চিত্রের কিলার হাসিনা শিরোনামের একটি গান। গানটি ২০২২ সালে অর্জুন কুমার ও তুলশী কুমারের লেখা গাওয়া টি-সিরিজ থেকে প্রকাশিত হয়।

এরপর ভালো হয়ে যাও মাসুদ তুমি, এই কথা আর কে বলবে আর। পালিয়ে গেছে কাউয়া কাদের এই খবর কেউ যানে না। গানটি বাজানো ও ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। পরে একে একে বিভিন্ন গান বাজানো হচ্ছে।

এদিকে এদিন এর আগে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ফুলের তোরা দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে জনরোষের গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন আজিজুর নামের এক রিকশা চালক।

ওই ফুলের তোড়ার ওপর লেখা ছিল, ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫১ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সাধারণ রিকশাওয়ালা হিসাবে বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসে শ্রদ্ধা জানাতে নিজের সৎ উপার্জনের টাকা দিয়ে ফুল কিনে এসেছি। আমি কোন দল করি না। শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসি।

এছাড়াও এই দিনটিতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে এসে হেনস্তার শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এর মধ্যে দুই-এক জনকে চড়-থাপ্পড়, মারধরও করা হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক কাউকে আটকের ঘটনা ঘটেনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সড়কের দুই পাশেই পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে রেখেছে। শুধু গণমাধ্যমকর্মীদের ভেতরে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। দুই পাশেই ছাত্রদলসহ বিভিন্ন দলের কয়েকজন নেতাকর্মী রয়েছেন।

এছাড়া শেখ মুজিবুর রহমানের ভাঙা বাড়ির সামনে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে পাহারা দিতেও দেখা গেছে ।

এদিকে, সকাল থেকে এক দম্পতিসহ চারজন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন। এর মধ্যে সকাল সোয়া ৯টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সড়কের পশ্চিম পাশে তিন সন্তানসহ শ্রদ্ধা জানাতে আসেন এক দম্পতি। তখন তারা স্থানীয় বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের রোষানলে পড়েন। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।

ওই দম্পতির পিরোজপুর থেকে এক মাস আগে ঢাকায় এসেছেন বলে জানা গেছে। ঢাকায় জুতার ব্যবসা করা ওয়ালিউল্লাহ বলেন, শেখ হাসিনা দেশের জন্য অনেক কিছু করেছেন। তাই তারা শেখ মুজিবের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন।

একই সময় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সড়কের পূর্ব পাশে পৃথক দুই ব্যক্তি শ্রদ্ধা জানাতে এসে হেনস্তার শিকার হন। তাদের কলার চেপে ধরাসহ চড়-থাপ্পড়ও মারেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। পরে তাদের পুলিশ ছাড়িয়ে নিয়ে রিকশায় করে পাঠিয়ে দেয়। সকাল ১০টার দিকে এক নারী শেরেবাংলা নগর থেকে ফুল দিতে আসেন। এ সময় তাকেও হেনস্তা করা হয়।

হালিমা নামের ওই নারী বলেন, শেখ মুজিবের পরিবারের সদস্যদের শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। আমি আওয়ামী লীগ করি। এ সময় পুলিশ তাকে রিকশায় করে পাঠিয়ে দেয়।

গুলশান ছাত্রদলের কর্মী তানজীব বলেন, ধানমন্ডিতে মানুষ যাতে শান্তিতে থাকতে পারে এবং আওয়ামী লীগের লোকজন যাতে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য পুলিশের পাশাপাশি আমরা এখানে আছি। দুই একজন আওয়ামী লীগের লোক এসেছিল, আমরা তাদের সরিয়ে দিয়েছি।

এ বিষয়ে রমনা জোনের ডিসি মাসুদ আলম চ্যানেল24 কে জানান, গতকাল থেকেই কড়া অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন তারা। এখন পর্যন্ত যাদের নিয়ে আসা হয়েছে তাদের সংখ্যা সাত আটজনের বেশি না। যাছাই বাছাই করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে অনেককে।

নবীনতর পূর্বতন