প্রশাসনিক শূন্যতায় স্থবির বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সেশনজটের আশঙ্কা

 

প্রশাসনিক শূন্যতায় স্থবির বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সেশনজটের আশঙ্কা

বেরোবি প্রতিনিধি: ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদত্যাগের ফলে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রশাসনিক শূন্যতায় স্থবির হয়ে পড়েছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)।


সরকার পতনের পরদিনই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. শরিফুল ইসলামসহ ছয়জন পদত্যাগ করেন। গত ৯ আগস্ট পদত্যাগ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাসিবুর রশীদ, ট্রেজারার অধ্যাপক মজিব উদ্দীন আহমদ ও আবাসিক হলসমূহের প্রভোস্টসহ আরও ৩২প্রশাসনিক কর্মকর্তা ধাপে ধাপে পদত্যাগ করেন। ফলে গত ১৮ আগস্ট ৭৫ একরের বিশ্ববিদ্যালয়টি খুললেও এখনও কার্যত স্থবির হয়ে রয়েছে সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম। এমতাবস্থায়, দ্রুত শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করা না গেলে সেশনজটের আশঙ্কা করছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।


এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “বতর্মানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসিসহ প্রশাসনিক কাঠামোতে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা দ্রুত নিষ্পত্তি করা প্রয়োজন। কারণ প্রায় দুমাস আগে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকলেও আমাদের শিক্ষার্থীদের মাঝে বড় ধরনের সেশনজটে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। তাই সরকারের উচিত অতি দ্রুত এ দিকে সুদৃষ্টি দিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া।”


প্রশাসনশূন্য বেরোবির বিষয়ে বিজনেস স্টাডিজ বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মতিউর রহমান বলেন, “ইতিমধ্যে আমাদের ছয় মাসের সেমিস্টার থেকে দুমাস পিছিয়ে গিয়েছি আমরা। সুতরাং, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমরা একটা সেশনজটে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছি। কারণ করোনার পর আমরা যেভাবে এগিয়েছিলাম, এ দুমাস ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় তা ম্লান হয়ে গিয়েছে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রো-ভিসি, প্রক্টরিয়াল বডি, বহিরাঙ্গণের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং আবাসিক হলগুলোতে প্রভোস্টরা না থাকার কারণে আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি দেখার কেউ নেই। প্রশাসনে নতুন দায়িত্বশীলরা না এলে, এ অবস্থায় নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয়।”


এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি নেটওয়ার্কজনিত সমস্যার কথা উল্লেখ করে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।


উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নং ফটকের সামনে এক পুলিশ সদস্যের গুলিতে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। পরে প্রশাসনের প্রশ্রয়ে শিক্ষার্থীরা হতাহত হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে আন্দোলনকারীরা উপাচার্যসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

নবীনতর পূর্বতন