ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজে ভর্তি প্রস্তুতির জন্য যা জানা জরুরী

ঢাবি অধিভুক্ত কলেজে ভর্তি প্রস্তুতির জন্য যা জানা জরুরী
ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আসন নিজের জন্য দখল করা অনেকটা যুদ্ধজয়ের মতোই। এ কারণে অনেকে বলেন ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি যুদ্ধ’। রাজধানীতে যারা পড়তে চান, তাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ। সদ্য এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীদের অনেকে সাত কলেজে ভর্তির জন্য আলাদাভাবে প্রস্তুতিও নিচ্ছেন।

২০১৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি অধিভুক্ত করা হয় ঢাকার সরকারি সাত কলেজকে। এরপর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টির অধীনেই পরিচালিত হচ্ছে কলেজগুলোর ভর্তি কার্যক্রম। প্রতিবছর স্নাতক পর্যায়ে এ কলেজগুলোতে ২১ হাজার ৫১৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পান। আজকের প্রতিবেদনে থাকছে ঢাবি অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ।

সাত কলেজে মোট আসন সংখ্যা

সাত কলেজে মোট আসন সংখ্যা ২১ হাজার ৫১৩টি। এদের মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদে ৬ হাজার ৫০০ টি, বাণিজ্য ইউনিটে ৫ হাজার ৩১০টি এবং কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ৯ হাজার ৭০৩ টি আসন রয়েছে। এক্ষেত্রে ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের আসনসমূহ শুধু ছাত্রীদের এবং ঢাকা কলেজের আসনসমূহ শুধু ছাত্রদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এ ছাড়াও সরকারি তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, এবং সরকারি বাঙলা কলেজে ছাত্র-ছাত্রী উভয়ই ভর্তি হতে পারবে।

নম্বর বণ্টন

মোট ১০০ নম্বরের প্রশ্ন থাকে যেখানে ৪০ পাস নম্বর। কোনো নেগেটিভ মার্কিং নেই বিজ্ঞান অনুষদে পদার্থ, রসায়ন, গণিত ও জীববিজ্ঞান প্রতিটি থেকে ২৫ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। কোনো প্রার্থী চাইলে ৪র্থ বিষয়ের পরিবর্তে বাংলা অথবা ইংরেজি যেকোনো একটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে। প্রতি বিষয়ের জন্য নম্বর ২৫।

মানবিক অনুষদে বাংলা ও ইংরেজি প্রতিটি থেকে ২৫ নম্বরের প্রশ্ন এবং সাধারণ জ্ঞান থেকে ৫০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। বাণিজ্য অনুষদে বাংলা, ইংরেজি, হিসাববিজ্ঞান এবং ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ প্রতিটি থেকে ২০ করে ৮০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। মার্কেটিং/ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং থেকে যেকোনো একটির উত্তর করতে হবে। এটাতেও নম্বর থাকবে ২০।

বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি প্রস্তুতি

উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাস থেকেই এই অংশের প্রশ্ন করা হয়। রসায়নের ক্ষেত্রে বিভিন্ন মৌলের পারমাণবিক ভর, যোজনী , গলনাঙ্ক, স্ফুটনাঙ্ক, রাসায়নিক বিক্রিয়া, গুরুত্বপূর্ণ যৌগের সংকেত বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রাশির একক মাত্রা, সূত্রসমূহ এবং ছোট গাণিতিক সমাধানগুলো গুরুত্বপূর্ণ।

তবে প্রতিটি বিষয়েই মূল বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আয়ত্ত করার পাশাপাশি প্রশ্নব্যাংক থেকে বিগত বছরের প্রশ্নগুলো সমাধান করতে হবে। সাত কলেজে বর্তমান অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মতে ভালোভাবে বিগত বছরের প্রশ্নসমূহ সমাধান করলে ভর্তি পরীক্ষায় প্রায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত নম্বর নিশ্চিত করা সম্ভব।

বাণিজ্য অনুষদের ভর্তি প্রস্তুতি

বাণিজ্য অনুষদে কিছু গাণিতিক প্রশ্ন থাকলেও অধিকাংশই থাকে তত্ত্বীয় প্রশ্ন। এ কারণে মূল বই ভালোভাবে পড়তে হবে। একইসাথে প্রশ্নব্যাংক থেকে বিগত বছরের প্রশ্নসমূহ সমাধান করতে হবে। এর ফলে একদিকে যেমন প্রশ্ন সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা তৈরি হবে। অপরদিকে নিজের দুর্বলতা চিহ্নিত করে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি গ্রহণও সহজ হবে।

কলা অনুষদের প্রস্তুতি 

বাংলা প্রথম পত্রের জন্য মূল পাঠ্যবইয়ের গদ্য, পদ্য ও উপন্যাসের শব্দার্থ, মূলভাব, লেখক পরিচিতি এবং তাদের সাহিত্যকর্ম গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাকরণ অংশে সাধারণত জন্য নবম-দশম শ্রেণীর বাংলা ব্যাকরণ থেকে অধিক প্রশ্ন করা হয়।ইংরেজির ক্ষেত্রে Parts of speech, Article, Tense, Voice, Sentence Correction, Spelling, Right form of verb, Preposition, Translation, Synonyms, Antonyms, Idiom , Joining sentence, Comprehension গুরুত্বপূর্ণ।

সাধারণ জ্ঞান অংশে সাধারণত বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক ঘটনা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়ে পঠিত সমাজবিদ্যা, রাজনীতি, অর্থনীতি,ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস, যুক্তিবিদ্যা, ভূগোল, ধর্ম ইত্যাদি বিষয়ক প্রশ্ন থাকে।
নবীনতর পূর্বতন