শেখ মুজিব: সাহসী নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক বিতর্কের এক অধ্যায়

শেখ মুজিব: সাহসী নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক বিতর্কের এক অধ্যায়
শাহরিয়ার আহমেদ নয়ন

শেখ মুজিব ছিলেন সাহসী। তার ছিল আকর্ষণীয় জ্বালাময়ী ভাষণ যা মানুষকে চরমভাবে আন্দোলিত করত। তবে রক্ত গরম করা ভাষনের সাথে তার কথার কোন মিল ছিল না। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর শেখ মুজিব দেশকে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানিকরণের দিকে না নিয়ে ব্যক্তিগত ক্ষমতা লাভের দিকে প্রবাহিত করেন। বস্তুত, মুজিব দূরদর্শী নেতা ছিলেন না। তার মাঝে ছিল বাগ্মীতার গুণ, নিজেকে জাহির করার গুণ নিজের প্রতি ইগো তৈরি করার গুণ ছিলো কিন্তু সুশাসনের গুণ ছিল না। কেউ তাকে বঙ্গবন্ধু বা জাতির পিতা বললে খুব খুশি হতেন কিন্তু এগুলো সমালোচনা শোনার সহনশীলতা তার মাঝে ছিল না। বড় বড় বক্তব্য ও প্রতিশ্রুতি দানের ক্ষমতা ছিল কিন্তু সম্মতের ভিত্তিতে কাজ করা গুন ছিল না। [বই: সংবিধান সাংবিধানিক আইন ও রাজনীতি: বাংলাদেশ প্রসঙ্গ]
স্বাধীনতার পর তার গুরু ভাসানীকে স্বার্থের কারণে গৃহবন্দী করেছে।
মুজিব ছিলো কখনো ভারতপন্থী কখনো পাকিস্তান, কখনো সোহরাওয়ার্দী, কখনো ইন্দিরা যখন যাকে প্রয়োজন হয়েছে তখন তার দয়া নিয়েছে প্রয়োজন শেষ হলে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে।

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে পক্ষে বা বিপক্ষে শেখ মুজিবরের কোন ভূমিকা ছিল না
১৯৫৮ সালে শেখ মুজিব কে বলা হত চোরাই মন্ত্রী পাকিস্তানের সাথে যোগ দিয়ে চার দিনের জন্য মন্ত্রী হন তিনি। [বই: আমার দেখা রাজনীতির ৫০ বছর]

১৯৬৬ সালে এসে সে সময় শেখ মুজিবুর রহমান দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, তিনি তার নিজের মতো করে রাজনীতি করার চেষ্টা করে এবং ছয় দফার ঘোষণা দেয়। ছয় দফার বিরোধিতা করে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী।
দুর্নীতির মামলা সহ দফায় দফায় শেখ মুজিব জেল খেটেছেন। জেল থেকে বের হয়ে শেখ মুজিব ছয় দফার ঘোষণা দেন। অনেকে মনে করেন পশ্চিম পাকিস্তানের ইশারায় শেখ মুজিবুর রহমান ৬ দফার ঘোষণা দেন। ছয় দফার মধ্যে কোথাও পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করার জন্য ইঙ্গিত মাত্র দেয়া হয়নি 

বই: বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ দলিল পত্র ২য় খন্ড: 

(মুজিবের লিখিত বক্তব্য তুলে ধরা হলো)
আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা আপনারা দেখিতেছেন যে আমার ছয় দফা দাবিতে একটিও অন্যায় অসঙ্গত পশ্চিম পাকিস্তানি বিরোধী বা পাকিস্তান ধ্বংসকারী প্রস্তাব করি নাই। বরঞ্চ আমি যুক্তি সহকারে তর্ক সহকারে দেখাইলাম আমাদের সুপারিশ গ্রহণ করলে পাকিস্তান আরো বেশি শক্তিশালী হইবে। 

১৯৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পোস্টারের সবার উপরে লেখা ছিল পাকিস্তান জিন্দাবাদ। মুজিবের এত পাকিস্তান পিরিতির কারণে মাওলানা ভাসানী সবচেয়ে বেশি ক্ষিপ্ত ছিলেন। মাওলানা ভাসানী শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্থানি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চেয়ে বাংলা সংগ্রামী বির হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। 

বই: বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ দলিল পত্র ২য় খন্ড: 

শেখ মুজিবের প্রতি আহ্বান:
পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা সংগ্রামে শরিক হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানকে আহ্বান জানিয়েছে মাওলানা ভাসানী। ভাসানী বলেন মুজিব তুমি স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তানের সংগ্রামে যোগ দাও। যদি আমেরিকা ও ইয়াহিয়ার সাথে কাজ করো তাহলে আওয়ামী লীগের ধ্বংস অনিবার্য। 
এসবই প্রমাণ করে শেখ মুজিব স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলনে যোগ দেননি।

১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চের আগ পর্যন্ত শেখ মুজিব কখনোই বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবি তোলেননি। তবে ৭ ই মার্চের ভাষণে পড়ে সন্দেহ হয়েছিল শেখ মুজিব আসলে কি চাই সেটা নিয়ে। সাথে মার্চের ভাষণের মূল দাবি ছিল জনগণের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। তবে দাবি যাই হোক ৭ ই মার্চের ভাষণের কিছু অংশ মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তি যোগায়। এবং কিছু বাক্য শুনলে এটাই মনে হবে স্বাধীনতার ঘোষণা। 
রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দিব এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।
ভাষণের পর: বিদেশি গণমাধ্যমে মুজিবের সাক্ষাৎকার: you mean independent? 
উত্তরে: that I don't mean 

বই: তাজউদ্দীন আহমেদ নেতা ও পিতা 

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আব্বু অফিসে ২৫ মার্চ রাতে স্বাধীনতার ঘোষণা লিখে নিয়ে এসেছিলেন। এবং টেপ রেকর্ড নিয়ে এসেছিলেন। কথা ছিল মুজিব কাকুর সাক্ষরতার স্বাধীনতার ঘোষণা হোটেল ইন্টারকন্টিনারে অবস্থিত বিদেশি সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। মুজিব কাকু তখন উত্তর দিয়েছিলেন এটা আমার বিরুদ্ধে দলিল হয়ে থাকবে এটার জন্য পাকিস্তান আমাকে দেশদ্রোহিত বলে বিচার করতে পারবে।
সে সময়ে বিদেশি গণমাধ্যমে তাজউদ্দিন আহমেদের সাক্ষাৎকার: শেখ মুজিব কখনোই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যায় এমন কিছু করেননি।
শেখ মুজিব না চাইলেও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।
তাজউদ্দীন, জিয়াউর রহমান, উসমানী, নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা যখন শুরু হয়ে যায় তখনও ক্ষমতা নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল মুজিব বাহিনীর। শেখ মুজিব জেলে থাকলে ও শেখ মুজিবরের ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি মুজিব বাহিনী নামে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী বাহিনীর নেতৃত্ব দেয়। পুরো মুক্তিযুদ্ধ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুজিব বাহিনী এবং তাজউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলেছে। 
প্রথম দণ্ড বাঁধে মুজিবনগর সরকার নিয়ে 

বই: মূলধারা ৭১ 

তারাও এ সরকারকে স্বীকার করে না বস্তু তো এই বাহিনীর সদস্যগুপ্তের জন্য সর্বদাইক হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান ও তার অনুপস্থিতির শেখ ফজলুল হক মনির প্রতি অনুগত্য অস্বীকার করে শপথ নামা পাঠ করা হতো।
 মে মাসে এক রকম প্রকাশ্যে আলোচিত হতে থাকে যে র এর এক বিশেষ উপস্থাপনের অধীনে শীঘ্রই দেড়েদুলে অদূরে চাকরা তাই এদের জন্য বিশেষ ট্রেনিং শুরু হয়েছে মুজিব বাহিনীর। জুন থেকে এদের ট্রেনিং শুরু হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে নভেম্বরের প্রথম দিক অব্দি তা অব্যাহত থাকে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এদের প্রথম দল আত্মপ্রকাশ করা সঙ্গে সঙ্গে এ কথা স্পষ্ট হয় যে এই বাহিনী পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কর্নেল উসমানী তথা বাংলাদেশ সরকারের কোন একতিআর নেই। 
বইয়ের ৬৭ নাম্বার পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে: 
মুজিব বাহিনী এতটাই উশৃংখল ও অন্তরঘাতী এবং মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়েছে। শীঘ্রই মুজিব বাহিনীকে মুক্তিযুদ্ধ কমান্ডের অধীনে আনা না হলে মুক্তিযুদ্ধের সর্ব অধিনায়ক জেনারেল উসমানী পদত্যাগ করবেন বলে তাহাজউদ্দিনকে সাপ জানিয়ে দেন। 

এতকিছুর পরও তাজউদ্দীন, ওসমানী, জিয়ার রহমানের নেতৃত্বেই স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীনতার পর মুজিব বাহিনী র য়ের নিয়ন্ত্রণে চলে যায় বাংলাদেশের ক্ষমতার কেন্দ্রে। আর যুদ্ধ না করেও শেখ মুজিবের হয়ে গেলেন জাতির পিতা। অঘোষিত একনায়ক। 

১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত শেখ মুজিব কখনো একবারের জন্য মুক্তিযোদ্ধা বা মুক্তিযুদ্ধ উল্লেখ করেননি। এমনকি যুদ্ধে যারা নেতৃত্ব দিয়েছে তাহাজউদ্দিন, উসমানী সবাইকে ধিরে ধীরে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দিয়ে দেয়। সে সময় মোট ৪৩ জন কে বাদ দেওয়া হয়।
শেখ মুজিব সবসময় পাকিস্তান প্রেমি ছিল। ক্ষমতা গ্রহণের পরই শেখ মুজিব পাকিস্তানের ওআইসি সম্মেলনে যোগদান করেন। মুজাইক অফ মেমোরি বইয়ে বলা হয়েছে: যুদ্ধের পুর নয় মাস শেখ মুজিব জেলে থাকার কথা বলা হলেও শেখ মুজিব এবং ডক্টর কামাল আসলে একজন মেজরের বাসায় ছিলেন। যুদ্ধের পুরো সময় শেখ মুজিবর এর পরিবারকে পাকিস্তানি আর্মি সব ধরনের সহায়তা করেছিলেন।

উল্লেখ্য: যুদ্ধের সময় জন্ম হয় সজীব ওয়াজেব জয়েন সে সময় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর গাড়িতে করে হাসপাতালে আনা নেয়া হয়েছিল। এমনকি যুদ্ধের সময় শেখ মুজিবরের বাবা যখন গোপালগঞ্জে অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকা আনা হয় তাকে। 

মিথ্যা দিয়ে একজন স্বাধীনতা বিরোধী কে উপরে উঠাতে গিয়ে যখন দেশ প্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা দের স্বাধীনতা বিরোধী বানানো চেষ্টা করা হয় তখন সত্য ইতিহাস জানা জরুরী হয়ে যায়।

বই: সংবিধা সাংবিধানিক আইন ও রাজনীতি 

স্বাধীনতা পূর্ব মুজিব এবং স্বাধীনতা পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মুজিবের মধ্যে রয়েছে আকাশ পাতাল ব্যবধান বঙ্গবন্ধু হিসেবে মুজিব ছিলেন চমৎকার কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দুর্বল। 
ক্ষমতা লাভের পর মুজিবের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে যে যখন প্রতিবাদ করেছে তাকেই তিনি তখন শায়েস্তা করেছেন। রক্তি বাহিনী আইন ১৯৭২ সালে ৮ ফেব্রুয়ারি পাস করা হয়। সেনাবাহিনী যাতে তাকে কখনোই ক্ষমতা থেকে সরাতে না পারে সেজন্য সেনাবাহিনীর আধরে এই রক্ষী বাহিনী গঠন করা হয়। 

১৯৭৩ সালে শেখ মুজিবর এর অতিষ্ঠে সাধারণ মানুষ জাসদ কে ভোট দেয়। কিন্তু শেখ মুজিব স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম ভোট ডাকাতি করে জাসদের জয় ছিনিয়ে নেয়। শেখ মুজিবারের ভোট চুরির অকল্পনীয় বর্ণনা দেয়া হয়েছে। বই: সংবিধান সাংবিধানিক আইন ও রাজনীতি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে: ১৯৭৩ সালে ভোট গ্রহণ শেষে বেতার টিভিতে নির্বাচনের ফলাফল শুরু হলে আওয়ামী লীগ যখন দেখতে পেলো যে আওয়ামী লীগ প্রথম সারির কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে কতিপয় নেতার কাছে পরাজিত হতে চলেছে তখন সরকারি মিডিয়া ক্যু এর আশ্রয় নিতে শুরু করে। কেন্দ্রীয় প্রচার কমিটিকে বাদ দিয়ে গণভবনে কন্ট্রোলরুমে ফলাফল প্রচারের দায়িত্ব নেয়। আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতাকে জোর করে বিজয়ী করার জন্য ছয়টি নির্বাচনে এলাকায় হেলিকপ্টার পাঠিয়ে দেয় এবং সকল ব্যালট বক্স ছিনিয়ে নিয়ে নতুন ব্যালট পেপার ভর্তি বক্সগুলো কেন্দ্রে রেখে আসে।
১৯৭৩ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবী প্রথম বিরোধী দলের নেতা কে গুম করার নজির গড়ে তোলে। ৭৩ এর নির্বাচনের শেখ মুজিব চারটি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন এর মধ্যে ভোলার ডক্টর আজহারউদ্দিন ছিলেন একজন শক্তিশালী প্রার্থী। যে কারণে মুজিব তাকে মনোনয়নপত্র জমা দিনে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ওই আসলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এভাবেই ভোট চুরি মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী-এমপিরা লাগামহীন দুর্নীতির মাধ্যমে দেশকে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দেয়। যে কারণে ১৯৭৪ সালের দেশে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। তবে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা তখন ও বেহেস্ত ছিল। বাস্তবে জাহান্নামে থাকা ব্যক্তিদেরও বেহেস্তে আছে বলতে বাধ্য করতো। দুর্ভিক্ষ নিয়ে সরকারের সমালোচনা করলেই তার ওপর নির্যাতন। আলোচিত কবি রফিক আজাদ শেখ মুজিবুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে ভাত দে হারামজাদা কবিতাটি লিখলে তাকে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। 
বিদেশি সাংবাদিক মুজিবকে প্রশ্ন করেছিলেন মানুষ খাবার পাচ্ছে না। জবাবে মুজিব বলেন এই সবই গুজব। আমরা ফ্রিতে মানুষকে খাবার দিচ্ছি বলে মাত্র ২৭ হাজার মানুষ মারা গিয়েছে। তা না হলে কয়েক মিলিয়ন মানুষ মারা যেত পারত। আন অফিসিয়ালি চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষে দুই থেকে তিন লক্ষ মানুষ মারা যায়। 
৭৪ এর দুর্ভিক্ষেপ পরে সারা দেশের মানুষ মুজিব সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছিলেন। সে কারণে তখন শেখ মুজিবুর রহমান বলেন আমাদের যে অবস্থা আগামী নির্বাচনে ২৫ থেকে ৩০ টি আসনের বেশি পাবো না, তখন জামাত ও অন্যান্য স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির জোট বেঁধে আওয়ামী লীগ ও স্বাধীনতার পক্ষে শক্তিকে কচুকাটা করবে। [বই: রাজনীতির তিন কাল]

শেখ মুজিব জোর করে ক্ষমতায় থাকতে বাকশাল গঠন করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু যারাই বাকশালের বিরোধিতা করে তাদের অবস্থা কতটা খারাপ হয়েছিল ওই সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারাই বলেছে। বাকশাল বলতে বোঝানো হয় এক নেতা, একদল, এক দেশ। বাকশালের বিরোধিতা করে তাজউদ্দিন আহমেদ বলেন মুজিব ভাই এজন্যই কি আমরা ২৪ বছর সংগ্রাম করেছিলাম যেভাবে দেশ চলছে আপনি থাকবেন না, আমরা ও থাকবো না দেশ চলে যাবে রাজাকার আল বদরের হাতে। মুজিব সংসদে ঘোষণা দেন বাকশালের বিরোধিতা করা হলে তাদেরকে জবাই করে টুকরা টুকরা করে কুকুর দিয়ে খাওয়ানো হবে। এভাবেই ক্ষমতার লোভে সংসদ, সংবিধান আইন, বিচার, শাসন সবকিছুকেই কুক্ষিগত করে দেশকে এক নরকে পরিণত করেছিল শেখ মুজিব। 

অনেকেই একটি যৌক্তিক প্রশ্ন করেন শেখ মুজিব যদি ভালো না হবে, তাহলে পাকিস্তানিরা তাকে এতদিন জেলে কেন রেখেছিলে? লম্বা সময় জেল খাটলেই যদি জাতির পিতা হয়ে যায় তাহলে এখনকার বড় বড় সন্ত্রাসীদের ও জাতির পিতা ডাকা উচিত! কোন সন্দেহ নাই শেখ মুজিব একজন সাহসী নেতা ছিলেন। বিরোধী দলে থাকার কারণে পাকিস্তান সরকারের বিরোধিতা করে বারবার নানা কারণে জেলে গিয়েছিলেন। তার জন্য সে মানুষের কাছে ভালোবাসা ও বঙ্গবন্ধু উপাধি ও পেয়েছিলেন। কিন্তু সাহস আর সততা এক জিনিস নয়। 

 
লেখক: শিক্ষার্থী, সাংবাদিকতা ও মিডিয়া বিভাগ, সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়।


নবীনতর পূর্বতন