তিথী রানি শীল, ইংরেজি বিভাগ( ১৩তম আবর্তন), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়:
আমাদের হয়তো মান্নাদের কফি হাউজ নেই, কিন্তু ববির শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের কাছে ভোলা রোডের সেই মামুন মামার দোকানটিই আমাদের স্বপ্নগাঁথার উঠোন। শীতের সকালে, কুয়াশা মোড়া চারপাশে মামুন মামার চায়ের কাপ থেকে উঠে আসা ধোঁয়া যেন জীবনের ক্লান্তি গুলোকে উড়িয়ে নিয়ে যায়। বন্ধুদের হাসি, কৌতুক, আর স্বপ্নের টুকরোগুলো মিলেমিশে এখানে একটা ভিন্ন জগৎ তৈরি করে।
এখানে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত যেন এক অনন্য আবেগ নিয়ে ঘেরা। চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার সময় মনে হয়, এমন সময় তো চিরকাল থাকবে না। হয়তো বন্ধুরা একদিন হারিয়ে যাবে নিজ নিজ জীবনের জটিল বাঁকে। মামুন মামা তখনও হয়তো চা বানাবেন, ভোলা রোড তখনও তেমনি থাকবে, কিন্তু সেই চেনা মুখগুলো থাকবে না।
ভাবতে গেলে বুকটা হালকা কেঁপে ওঠে এ জীবনের প্রতিটি অধ্যায় কত অল্প সময়ের জন্য! এ চায়ের দোকানে গড়ে ওঠা প্রতিটি গল্প যেন আমার হৃদয়ে লেখে এক অনন্ত উপাখ্যান। হয়তো একদিন কর্মজীবনের ব্যস্ততার ভিড়ে আমি নিজেও হারিয়ে যাব, কিন্তু সেদিনও হয়তো মনে পড়বে, ভোলা রোডের মামুন মামার সেই গরম চা আর কুয়াশা মোড়া সকালগুলো।
মান্নাদের "কফি হাউজের সেই আড্ডাটা" গানের মতোই একদিন হয়তো এসব গল্প শুধু স্মৃতির ভাঁজে বন্দী হবে। কিন্তু আজকের এই সকালে, চায়ের ধোঁয়ার ভেতর দিয়ে আমি যে জীবনের গল্প লিখছি, তা হয়তো চায়ের কাপে জমে থাকা আমার সেরা অধ্যায় হয়ে থাকবে। জীবন হয়তো একদিন থমকে দাঁড়াবে, কিন্তু এই ভোলা রোড, মামুন মামার দোকান আর আমাদের এই চা আড্ডা এগুলো স্মৃতির মণিকোঠায় চিরজাগরুক থাকবে।