‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি’ শেখানোর অজুহাতে রাতভর চলে র‍্যাগ, ৩০ ভুক্তভোগীর অভিযোগ




নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে র‍্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৮তম আবর্তনের ৩০ জন শিক্ষার্থী। ম্যানার শেখানোর নামে ঘন্টার পর ঘন্টা তাদের মানসিক ও শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ভুক্তভোগী ৩০ শিক্ষার্থী।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, বিভাগের ১৭তম আবর্তনের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা ‘চেইন অফ কমান্ড’ ও ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি’ শেখানোর অজুহাতে তাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালান। ছেলেদেরকে বঙ্গবন্ধু হলের ৪১৬, ৮২৪ এবং অগ্নিবীণা হলের ৫০৫ নম্বর কক্ষসহ জঙ্গলবাড়ি নামক একটি স্থানে নিয়ে গিয়ে রাতভর আটকে রাখা হয়। এসময় তাদের মানসিক ও শারীরিকভাবে অত্যাচার করা হয়।

ভুক্তভোগীরা জানান, ২১ জানুয়ারি বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ৩২ জন শিক্ষার্থীকে ডেকে এনে মানসিকভাবে চরম হেনস্তা করা হয়। এতে দুই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে, যেখানে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, সিনিয়ররা বিভিন্ন রুমে ডেকে নিয়ে তাদেরকে অপমানজনক অঙ্গভঙ্গি ও নৃত্য করার নির্দেশ দেন। অনেক সময় রাতের বেলা সিনিয়রদের ফোন দিয়ে অশ্লীল প্রস্তাব দিতে বাধ্য করা হয়। এসময় তারা ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। প্রক্টরের কাছে জমা দেওয়া অভিযোগে তারা লিখেছেন, “আমাদের ক্যাম্পাসে নিরাপদ ও স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে চাই। যারা এতদিন আমাদের হেনস্তা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

উল্লেখ্য, এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকনা সংলগ্ন এলাকায় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৭তম ব্যাচের সিনিয়র কর্তৃক ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যথারদান মেডিকেলে চিকিৎসাধীন হলে খোঁজ পেয়ে উপস্থিত হন প্রক্টরিয়াল বডি। পরবর্তীতে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাসুদুর রহমানকেও ঘটনাস্থলে ডেকে আনা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, র‍্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস গঠনে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় বদ্ধপরিকর। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিচার ও শাস্তির আওতায় আনা হবে।
নবীনতর পূর্বতন