জাবিপ্রবি ছাত্রদল আহ্বায়ক শাকিলের বিরুদ্ধে ১৯ নেতার অনাস্থা


জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক শাকিল আহমেদ ও এক সদস্য সাখাওয়াত হোসেন জিকুর বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়েছেন সংগঠনটির একাংশের নেতারা।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে প্রেসক্লাব জামালপুরে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই অনাস্থা জানান ছাত্রদলের ১৯ জন নেতা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এ কে এম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। তিনি বলেন, “আহ্বায়ক শাকিল আহমেদ ও এক সদস্য শাখাওয়াত হোসেন জিকু সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর জোরপূর্বক ছাত্ররাজনীতিতে অংশগ্রহণের চাপ প্রয়োগ এবং ভয়ভীতির প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে৷ শিক্ষার্থীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করা শিক্ষার পরিবেশকে বিপন্ন করে এবং এটি ছাত্রদলের নীতিগত অবস্থানের সাথে সাংঘর্ষিক। আমরা চাই ছাত্ররাজনীতি হোক গণতান্ত্রিক, মুক্ত ও স্বতঃস্ফূর্ত৷”

আব্দুল্লাহ আরও বলেন, “এই অনিয়মের কারণে ছাত্রদলের ১৯ জন নেতা তাঁদের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই অভিযোগের তদন্ত করার দাবি জানানো হয়েছে।”

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পর থেকে আহ্বায়ক শাকিল আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছেন। বিষয়টি আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে জানিয়েছি। তারা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে।”

অন্যদিকে, অনাস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের আহ্বায়ক শাকিল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, “৫ আগস্টের পর থেকে স্বৈরাচারের দোসররা ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। সাধারন শিক্ষার্থীর ব্যানারে শিবির ছাত্র রাজনীতি বন্ধের জন্য কাজ করছে। আমি এসব প্রতিহত করছি। আর ছাত্রদল সাধারন ছাত্রদের সংগঠন। আমি কাউকে  রাজনীতি করার জন্য জোর করিনি। বিষয়টি সকলে ভিন্নভাবে দেখছে। এখন রাজনীতিতে গ্রুপিং থাকতেই পারে। এর জন্য অনাস্থা চাওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়। আর আমাদের ৩৮ জনের কমিটি। গুটি কয়েকজন অনাস্থা চাইলেই কি আর হয়? যারা সংবাদ সম্মেলন করেছে। এক সাথে রাজনীতি করার জন্য আমি তাদেরকে বার বার নক করেছি। কিন্তু তাদের আমি রিচ করতে পারিনি। তারা ব্যক্তি স্বার্থে এসব করছে। এতে দলের, ক্যাম্পাসের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।”

এ বিষয়ে ছাত্রদলের ময়মনসিংহ বিভাগের (বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজ) দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি হাফিজুর রহমান সোহানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি শাকিল আহমেদকে আহ্বায়ক ও যীনাত মিয়া আজিজুলকে সদস্য সচিব করে ৩৮ সদস্যের কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।

এদিকে এর আগে শিক্ষার্থীদের দাবি এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাপতিত্বে বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান, হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক এবং হাউস টিউটরদের উপস্থিতিতে গত সোম ও বুধবার দুটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গত বছরের ৯ আগস্ট ও ১৭ অক্টোবর তারিখের স্মারক মোতাবেক ঘোষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল রাজনৈতিক কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধের আদেশ বহাল রাখে এবং এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করা হয়৷

নবীনতর পূর্বতন