নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৫ পালিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্প্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ উপাচার্য , কোষাধ্যক্ষ ও শিক্ষক , কর্মকর্তা - কর্মচারী বৃন্দ।
আজ বুধবার (২৬ মার্চ ২০২৫) আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, সংক্ষিপ্ত আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানসমূহে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল।
এদিন সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর স্বাধীনতা দিবসের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শোভাযাত্রাটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শেষ হয়। পরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তামজীদ হোছাইন চৌধুরী, প্রক্টর এ.এফ.এম আরিফুর রহমানসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগের চেয়ারম্যান, হলের প্রভোস্ট, ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সকাল সাড়ে দশটায় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে সংক্ষিপ্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৭১ এর স্বাধীনতা সংগ্রাম, ৯০ এর গণ আন্দোলন এবং সর্বোপরি ২৪ এর বিপ্লবে যারা শাহাদাতবরণ করেছেন সবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আজকের এই দিনে আমাদের মূল প্রতিপাদ্য হলো আমরা সকল বৈষম্য এবং অনাচার দূর করতে চাই। আমরা একটি ন্যায়ভিত্তিক শোষণমুক্ত সমাজ চাই। যার জন্য শহিদেরা তাঁদের বুকের তাজা রক্ত দিয়েছেন। আমাদের ওপর যে অর্পিত দায়িত্ব রয়েছে তা যদি যথাযথভাবে পালন করি তাহলেই শহিদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হবে।
এ সময় উপাচার্য আরও বলেন, আমরা যদি সেবার উদ্দেশ্যে বিধিমোতাবেক এবং সরকারি আইন লঙ্ঘন না করে কাজ করি তাহলে আমরা আমাদের বিবেকের কাছে পরিষ্কার থাকবো। আমরা যদি সবাই মিলে কাজ করি তাহলে দ্রুতই দেশকে একটি অবস্থানে নিয়ে যেতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজওয়ানুল হক বলেন, ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে বর্বর গণহত্যার মাধ্যমে যে মহান মুক্তিযুদ্ধের শুরু হয় ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় আসলেও ওই যুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। শুধু আলোচনা নয়, আমরা যেন মন থেকে দেশটাকে ধারণ করি এবং অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করি সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, এতেই দেশপ্রেমের সর্বোচ্চ বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। যে কোনো অনিয়ম দূর করতে সবার সহযোগিতা লাগবে, তখনই দেশ এগিয়ে যাবে।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ বলেন, ২৫ মার্চের কালরাত্রিতে যারা শাহাদাতবরণ করেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। দেশের পরিবর্তন আনতে হলে নিজ নিজ অবস্থান থেকেই তা শুরু করতে হবে। প্রতিটি ব্যক্তি তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করলে যেকোনো ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব। এতেই শহিদদের যে স্বপ্ন ছিলো সেটি বাস্তবায়িত হবে। সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।
উল্লেখ্য, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে এ দিন বাদ যোহর মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ২৫ মার্চ রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে ২৫ মার্চের শহিদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও নিষ্প্রদীপকরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।