ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ আক্ষা দিয়ে অভিযোগ দায়ের


নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
: নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ছাত্রদল সভাপতি পরিচয় হয়রানির অভিযোগ তোলা শিক্ষার্থী শিশির পন্ডিতকে ছাত্রলীগের দোসর আক্ষা দিয়ে হলে সীট বাণিজ্যের অভিযোগ দিয়েছে তার রুমেরই তিনজন শিক্ষার্থী। 

শুক্রবার (২১ মার্চ) নোবিপ্রবি ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হল প্রশাসন বরাবর এক অভিযোগপত্রে এই অভিযোগ তোলা হয়। অভিযোগপত্রে তাকে ছাত্রলীগের দোসর আক্ষা দিয়ে তার শাস্তির দাবি করা হয়৷ অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা হলের ৪২৪ নাম্বার রুমের মুশফিকুর রহমান অলিন, আশিকুর রহমান জীবন এবং ফেরদৌস রহমান। 

অভিযোগপত্রে উক্ত রুমের শিক্ষার্থীরা বলেন, শিশির পন্ডিত অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে একটি হয়রানির অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। অভিযোগপত্রে প্রকৃত ঘটনা চেপে গিয়ে মনগড়া মিথ্যা নাটক রচনা করা হয়েছে। অভিযোগকারী শিশির পন্ডিত এবং তার বন্ধু চাকুরীজীবি হয়েও দুইটি সীট এলটমেন্ট পায় ৪২৪ নাম্বার রুমে। হল প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও তারা হলে উঠতে ব্যর্থ হয়৷ হল প্রশাসন কর্তৃক ধার্যকৃত সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তার রেফারেন্সে অন্য শিক্ষার্থী উক্ত সীটে উঠতে চায়। ইতোপূর্বে ইমরান কবির নামের তার আরেক বন্ধু পরিচয় দিয়ে উক্ত সীটে তার বেডশিট রেখে গেছে। আমরা রুমমেটরা তাতে আপত্তি জানাই। ৯ মার্চ শিশির পন্ডিত তার আরো দুই জুনিয়রকে তাদের সীটে তুলে দিতে আসে৷ আমরা বলেছিলাম যার সীট তাকেই থাকতে হবে৷ আমরা প্রভোস্ট মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলতে বলেছিলাম কিন্তু তিনি তা না করে আমাদেরই শুভাকাঙ্ক্ষী বড় ভাইয়ের নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে। 

অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়,  শিশির পন্ডিত কোনো কিছুর বিনিময়ে তার সীটে অন্যকে রাখতে চাচ্ছেন যা প্রকাশ্য সীট বাণিজ্য। শিশির পন্ডিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার আমলে ছাত্রলীগের সামনের সারির নেতা ছিলেন এবং তার দ্বারা শিক্ষার্থীদের হয়রানি এবং নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। এমতাবস্থায় মিথ্যা অভিযোগদায়েরের জন্য তার শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়৷ 

এ নিয়ে নোবিপ্রবি শিক্ষা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী শিশির পন্ডিত বলেন, আমি যে চাকরি করি তার কোন প্রমাণ তারা দিতে পারবে না। ওই সময় আমি ঢাকায় ছিলাম শুধুমাত্র একটা ব্যাংকে ভাইবা দিতে। আমি যদি চাকরি করতাম তাহলে আমি নিয়মিত অফলাইনে ক্লাস কিভাবে করি। আমি ক্লাসের সি আর হিসেবে আমাকে অফলাইনে প্রতিদিন ক্লাস করতে হয় যেটা চাকরি করলে সম্ভব হত না।  আমার রুমমেটদের নিয়ে আমার কোন অভিযোগ ছিল না। তারা যেহেতু এখন আমার নামে অভিযোগ দিচ্ছে তাহলে তারা ছাত্রদল নেতা জাহিদের অনুসারী।  অভিযোগকারীদের মধ্যে মুশফিকুর রহমান অলিনের জন্মদিনে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা স্বপ্নীল নাঈম তার জন্মদিনে সেলিব্রেট করেছিল । সেটার প্রমাণও আমার কাছে আছে। তাহলে সেও ছাত্রলীগের দোষর । 

ছাত্রলীগে সংশিষ্টতার বিষয়ে তিনি বলেন, বিগত পনের বছরে আমরা যারা হলে থেকেছি তারা বাধ্য হয়েই ছাত্রলীগের বিভিন্ন প্রোগ্রামাদিতে যেতে হয়েছে। বিগত জুলাই আন্দোলনে আমি অংশগ্রহণের কারণে ছাত্রলীগের হল সভাপতি আমাকে হল থেকে বের করে দেয়। সুতরাং ২/১ টা ছবি দিয়ে জাজমেন্ট করা যায় না। এমন হলে আমিও বলতে পারি ছাত্রদল নেতা জাহিদ ভাইয়েরও বা যারা আমার নামে হল প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছে তাদের এমন অনেক ছবি আছে যেখানে ছাত্রলীগের বিভিন্ন প্রোগামে তারা গিয়েছিল। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোবিপ্রবি কোষাধ্যক্ষ এবং ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ মুরাদ বলেন, অভিযোগপত্রটি আমরা পেয়েছি। ক্যাম্পাস খুললে এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অলরেডি একজন সহকারী হল প্রভোস্টকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

নবীনতর পূর্বতন