শিশির পন্ডিতের আনীত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি ছাত্রদল নেতার


নোবিপ্রবি প্রতিনিধি:
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী শিশির পন্ডিতের মিথ্যা অভিযোগ ও ছাত্রদল নেতাকে নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান। রবিবার (২৩ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে তিনি বলেন- আমি জাহিদ হাসান, শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। সম্প্রতি ছাত্রলীগ কর্মী শিশির পন্ডিতের মিথ্যা অভিযোগের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন পোর্টালে "ছাত্রদল সভাপতি পরিচয়ে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীকে হয়রানির অভিযোগ" শিরোনামে আমাকে জড়িয়ে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রকাশিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমার প্রাণের সংগঠন "বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল" কে বিতর্কিত করাই ছিল শিক্ষার্থী নিপীড়নকারী ছাত্রলীগ নেতার একমাত্র উদ্দেশ্য। 

বিবৃতিতে আরো বলেন, শিশির পন্ডিত চাকুরিজীবী হয়েও হল-এ সিট নিয়ে নির্ধারিত সময়ের আরও অনেক পরে নিজে না উঠে তার সিটে অন্য দুইজনকে তুলতে গিয়েছিল।হল প্রশাসনের নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কেউ তার সিটে না উঠলে উক্ত সিট অটো বাতিল হয়ে যায়।তাই ঐ রুমের বাসিন্দারা ঘটনার দিন শিশির পন্ডিতকে প্রভোস্টের সাথে কথা বলে আসার প্রস্তাব দিলে সে তাদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ায় এবং সিট বাণিজ্যের মাধ্যমে উক্ত রুমে এলটমেন্টহীন দুই শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে তুলে দিতে চায়।উদ্ভুত পরিস্থিতিতে উক্ত রুমের বৈধ বাসিন্দা, আমার ডিপার্টমেন্টের কাছের ছোট ভাই,আমাকে ঘটনাটা অবহিত করে এবং করণীয় জানতে পরামর্শ চায়। আমি তাদের সবাইকে প্রভোস্ট স্যারের কাছে যেতে বলি এবং শিশির পন্ডিতকেও ফোনের মাধ্যমেই ঐ একই অনুরোধ করেছিলাম।আমি বিনয়ের সাথেই বলেছিলাম, নিজেরা নিজেরা বিশৃঙ্খলা না করে সবাইকে নিয়ে প্রভোস্টের কাছে যেতে,প্রভোস্ট যেই সিদ্ধান্ত দিবে সবাই যেন তা মেনে নেয়। আমি একথাও বলেছিলাম,বৈধভাবে যার নামে সিট সেই উক্ত সিটে থাকবে, যদি শিশির পন্ডিতের নামে সিট থাকে তাহলে অবশ্যই শিশির পন্ডিত থাকবে এবং হল প্রশাসন সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে। এবং তাকে আমি সভাপতি পরিচয় দিয়েও কোন কথা বলিনি,উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই প্রসঙ্গ টেনে আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে। আমি পরিচয় দিয়েছিলাম, আমি ছাত্রদলের জাহিদ এবং এই পরিচয় নিয়ে আমি সবসময় গর্ববোধ করি এবং করে যাবো।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়- যদি হল প্রশাসনের অনুমতি ব্যতিত একজনের বরাদ্দকৃত সিটে অন্যজনকে কেউ অবৈধভাবে তুলে দিতে পারে,তাহলে যার প্রয়োজন নাই,সেও সিট বরাদ্দ নিয়ে অন্যের কাছে ভাড়া দিবে।কেউ কেউ বিভিন্ন লবিং তদবির করে সিট মেনেজ করে নিজেদের লোক তুলে দিয়ে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করবে।অর্থাৎ ধীরে ধীরে হল পূর্বের ন্যায় অপশক্তির নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে,যা আমরা কখনো চাইনা।আমরা চাই,হল-প্রশাসন নিয়ন্ত্রিত থাকুক সবসময়।

বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়- নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী শিশির পন্ডিতের বিরোদ্ধে ছাত্রনিপীড়নেরও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে,এরকম একজন নিপীড়নকারী ছাত্রলীগ নেতা হল-এ সিট পায় কীভাবে সেই প্রশ্নও রাখছি প্রশাসনের কাছে। 

বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন, এই ছাত্রলীগ নেতার বিরোদ্ধে উক্ত রুমের সকল বৈধ শিক্ষার্থীরা সিট বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। আরও উদ্বেগের বিষয়, এই ছাত্রলীগ নেতা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম করানোর জন্য নানানভাবে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করতেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এরকম লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন বায়োকেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপগুলোতে একাধিক শিক্ষার্থী এই ছাত্রলীগ নেতার দ্বারা নিপীড়নের স্বীকার হয়েছেন বলে স্বীকারোক্তি দিচ্ছেন। 

তিনি আরো দাবি করেন- বিশ্ববিদ্যালয় এবং হল প্রশাসন ছাত্রলীগ নেতা শিশির পন্ডিতের নামে সিট বাণিজ্য এবং শিক্ষার্থী নিপীড়নের অভিযোগের যথাযথ তদন্ত করবেন এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এই রকম মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে আমার এবং আমার প্রাণের সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার যে অপচেষ্টা চালানো হয়েছে আমি তার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। একইসাথে, সাংবাদিক বন্ধুদের যাচাই-বাছাই করতঃ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।

নবীনতর পূর্বতন