পরীক্ষায় অংশ না নিলেও সর্বোচ্চ নম্বর পেলেন ছাত্রলীগ নেতারা


পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের নম্বর দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সরকারি তিতুমীর কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। 

আজ রবিবার (২৭ এপ্রিল) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানান, ছাত্রলীগের পদধারী বেশ কয়েকজন নেতা ভাইয়া পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলেও তাদেরকে সর্বোচ্চ নাম্বার দেয়া হয়েছে। তবে এটা অস্বীকার করে বিভাগীয় প্রধান তাহমিনা আক্তার জানান, আসলে আমি জানি না, কে ছাত্রলীগ করে বা অন্য দল করে। ডিপার্টমেন্টের সকল শিক্ষার্থীই আমার কাছে সমান। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রলীগের রাকিবুল ইসলাম রাকিব, অনিক দেবনাথ, তোফায়েল আহমেদ জনি, ইমদাদুল হক আতিকুল রানাসহ বেশ কয়েকজনের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না থাকলেও নাম্বার দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ। 

শিক্ষার্থীরা জানান, তিতুমীর কলেজে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৯-২০ সেশনের ভাইভা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে কলেজে উপস্থিত হয়নি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ছাড়াও কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার জন্য আলাদাভাবে ভাইভা নেয়া হয়েছে। একইসাথে ভাইভা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলেও অন্যদের থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমাদের একদিন ভাইভা পরীক্ষা হয়। আমরা সকাল থেকে চারটা পর্যন্ত ক্যাম্পাসেই ছিলাম। কিন্তু আমরা তাদের দেখিনি। আমরা শতভাগ নিশ্চিত ওরা ভাইভা পরীক্ষায় আসেনি।’

বিষয়টি নিয়ে কলেজের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা ভাইভার দিন তাদের কাউকে ক্যাম্পাসে দেখিনি। পরবর্তীতে ফলাফল প্রকাশের পর আমরা দেখলাম, যারা ভাইভা দিতেই আসেনি তাদের বেশি মার্কস দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা শিক্ষকদের কাছে গেলে তারা বলেন, ভাইভার মার্কস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে থাকে আমাদের হাতে থাকে না।’ 

একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘তারা সবাই ৩.২৫-এর উপরে নম্বর পেয়েছে, কিন্তু একই ক্ষেত্রে আমাদের উপর বৈষম্য করা হয়েছে।’ 

এ সময় এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘আমি একজনের কথা জানি, ভাইভা শেষ হবার পর বিভাগের অফিস সহকারী গিয়ে ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে অ্যাটেনডেন্স সিটে স্বাক্ষর নিয়ে এসেছিল।’

অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তাহমিনা আক্তার অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা আসলে জানি না কে ছাত্রলীগ করে বা অন্য কোন সংগঠন করে৷ আমরা বিশেষভাবে কারো ভাইভা নেইনি, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন রয়েছে কেউ চাইলে অন্য কলেজে বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গিয়েও ভাইবা দিতে পারে।’

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোন কলেজকেন্দ্রিক আলাদা বোর্ড গঠন করা হয়েছিল কিনা এমন প্রশ্নে বিভাগীয় প্রধান বলেন, ‘যা হয়েছে সিস্টেমের মধ্যেই হয়েছে। তবে কিভাবে হয়েছে তা বলতে চাচ্ছি না।’

নবীনতর পূর্বতন