হলে সিট দখলের দ্বন্দ্বে ছাত্রদল নেতা, ছুরিকাঘাতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

হলে সিট দখলের দ্বন্দ্বে ছাত্রদল নেতা, ছুরিকাঘাতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ

মিরাজ হোসেন, জাবিপ্রবি প্রতিনিধি: জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবিপ্রবি) ছাত্র হলে সিট দখলকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রদলের দুই পক্ষের বিরোধে এক নেতার বিরুদ্ধে অন্য নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতা প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ১৩ সেপ্টেম্বর আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও জাবিপ্রবি শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এ কে এম আবদুল্লাহ আল মাসুদ এবং তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল আহমেদ, হলে থাকা সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ছাত্রদলের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইকরাম হোসেনের রুমে (ছাত্র হলের ২০৩ নম্বর রুম) প্রবেশ করে একটি সিট দখল নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন।

ইকরাম হোসেন অভিযোগে উল্লেখ করেন, সংশ্লিষ্ট সিটে পূর্বে সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহান ও রাশেদ অবস্থান করত এবং হলে নতুন সিট বণ্টনের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তিনি ওই সিটে উঠতে আপত্তি জানান। এক পর্যায়ে সিএসই বিভাগের চতুর্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল সদস্য মো. জোবাইদ হোসাইনকে জোর করে ওই সিটে তুলে দিতে চায় অভিযুক্তরা। এ সময় সেই সিটে থাকা তার (ইকরাম) কিছু ব্যক্তিগত জিনিসপত্র সরাতে গেলে তিনি নিষেধ করেন এবং ধমক দিলে উত্তেজনা দেখা দেয়।

অভিযোগে আরও বলা হয়, তখন ছাত্রদল সদস্য মো. জোবাইদ হোসাইন ওই সিটের ওপর থাকা একটি ছুরি হাতে নিয়ে যুগ্ম আহ্বায়ক ইকরামকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করতে উদ্যত হয়। তবে এসময় উপস্থিত অন্যরা তাকে আটকে দেয় এবং পরবর্তীতে রুমের বাইরে নিয়ে যায়।
ঘটনার পর ১৪ সেপ্টেম্বর ইকরাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের নিকট লিখিত অভিযোগ দেন। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদল সদস্য মো. জোবাইদ হোসাইনের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ পত্রের সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, "এসবের কিছুই হয়নি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমাকে সেখানে (২০৩ নম্বর রুম) মাসুদ ভাই ডেকেছিল, আমি শুধু গিয়েছিলাম।"

ছুরিকাঘাতে হত্যাচেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "এখন যদি মিথ্যা অভিযোগ দেয়, তাহলে তো আমার কিছু করার নেই। মিথ্যা অভিযোগ করতেই পারে, যেহেতু দুজন একই দলের। সেখানে তো একটা প্রতিহিংসা আছে, ঠিক না ভাই?"

অভিযুক্ত ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল আহমেদ ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, "বিষয়টি এমন না যে, তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে যাওয়া হয়েছে। এটা একটা অপপ্রচার ও অতিরঞ্জিত অভিযোগ করা হয়েছে।"

তিনি অভিযোগকারী ইকরামের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, "ইকরাম ভাই মা-বাবা তুলে গালি দিয়েছে, তখন সে (জোবাইদ) ছুটে গিয়েছে। সাথে সাথে আমরা তাকে আটকিয়ে রুমের বাইরে নিয়ে এসেছি। যেখানে থাকার জন্য অনেকে হলে সিট পাচ্ছে না, সেখানে তিনি (ইকরাম) তার জিনিসপত্র রেখেছেন এবং অন্যকে উঠতে দিচ্ছেন না, তাহলে তো সিট দখলই করা হয়ে যায়।"

অভিযুক্ত ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এ কে এম আবদুল্লাহ আল মাসুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে তার ফোনে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহকারী অধ্যাপক ড. সাদিকুর রহমান জানিয়েছেন, "অভিযোগ পেয়েছি এবং তাদের ডেকেছি। প্রাথমিকভাবে দুপক্ষকে নিয়ে বসব। এতে সমাধান না হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"

নবীনতর পূর্বতন