বেরিয়ে যেতে চায় বাকৃবি, ভেঙে যেতে পারে কৃষি গুচ্ছ

বেরিয়ে যেতে চায় বাকৃবি, ভেঙে যেতে পারে কৃষি গুচ্ছ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের কৃষি গুচ্ছভুক্ত সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছে। এতে করে কয়েক বছর আগে চালু হওয়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বিত ভর্তি পদ্ধতি ভাঙনের মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর আগেও বেরিয়ে যাওয়ার কথা বললেও শেষ পর্যন্ত গুচ্ছে থেকে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, সমন্বিত পদ্ধতিতে কিছু অসংগতি ও স্বকীয়তা হারানোর আশঙ্কায় বাকৃবি কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এতে করে বাকৃবির ভবিষ্যৎ ভর্তি কার্যক্রম আলাদাভাবে পরিচালনার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

বর্তমানে দেশের ৯টি কৃষি ও কৃষি-সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয় মিলে একটি গুচ্ছভুক্ত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়। একাধিক ভর্তি পরীক্ষা ও শিক্ষার্থী ভোগান্তি কমাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে, সদস্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মতানৈক্য, প্রশাসনিক জটিলতা ও ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কারণে এ গুচ্ছ ব্যবস্থার স্থায়িত্ব নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

জানা গেছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের আগে টানা পাঁচবার কৃষি গুচ্ছের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছিল বাকৃবি। এবারও তারা সেই সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে। গত শিক্ষাবর্ষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপের কারণে শেষ পর্যন্ত বাকৃবি গুচ্ছে থাকলেও এবার তাদের এই প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ফলে কৃষি গুচ্ছ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে কৃষি গুচ্ছভুক্ত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ‘বাকৃবি এককভাবে নেতৃত্ব দিতে চায়। তবে আমরা চাই বাই রোটেশন পদ্ধতিতে সব বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দিক। বাকৃবি যদি গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে আমরাও বেরিয়ে যাব। সবাই হয়তো বেরিয়ে যাবে। তবে আশা করছি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে তড়িৎ ব্যবস্থা নেবে।’

জানতে চাইলে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমরা গতবার কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। বিশেষ অনুরোধে, রাষ্ট্রীয় অবস্থার কারণে বেরিয়ে আসতে পারিনি। আমাদের এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া ছিল। এবারও আমরা আগের অবস্থানেই আছি। আমরা কৃষি গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসব, এটাই আমাদের বর্তমান সিদ্ধান্ত।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘এখন মন্ত্রণালয় নিশ্চয়ই খুব তাড়াতাড়ি এসব বিষয়ে মিটিং করবে। তখন আমরা মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দেব যে, আমরা আলাদা করব। তারপর দেখা যাক সরকার কী করে, অনেক সময় তো সরকার আবার বাধ্যবাধকতাও করে ছেলে-মেয়েদের কথা চিন্তা করে। এ জিনিসগুলো এখনো অনিশ্চিত।’

কৃষি গুচ্ছের আওতাধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

নবীনতর পূর্বতন