উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য বর্তমানে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী নিজ দেশ ছেড়ে পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে। বিদেশে উচ্চশিক্ষায় ভাষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন। বিশ্বের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার মাধ্যম ইংরেজি। তাই আন্তর্জাতিক এই ভাষায় দক্ষতা প্রমাণে একটি পরীক্ষা দিতে হয়। যা ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম (আইইএলটিএস) নামে পরিচিত।
যারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য প্রস্তুতি এবং প্রক্রিয়া দুইটিই শুরু করেছেন কিন্তু ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার প্রমাণে আইইএলটিএস নিয়ে হয়তো পিছিয়ে পড়ছেন অনেকে। তবে তাদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে বেশ কয়েকটি দেশে আইইএলটিএস ছাড়াই অন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ অফার করে থাকে
চলুন জেনে নিই আইইএলটিএসের ছাড়া যেসব দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ রয়েছে।
জার্মানি
স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ব মানের শিক্ষাব্যবস্থা, সময়োপযোগী বিষয়, ইতিহাস ও ঐতিহ্য মিলিয়ে কেবল বাংলাদেশ নয় বর্তমানে পৃথিবীব্যাপী শিক্ষার্থীদের কাছেই ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে পছন্দের বিবেচনায় সম্ভবত সবচেয়ে এগিয়ে জার্মাউচ্চশিক্ষায় বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য জার্মানি বেশ পছন্দের একটি দেশ। শিক্ষার উচ্চমান ও টিউশন ফি কম হওয়ার কারণে বিদেশি শিক্ষার্থীরা এই দেশে পড়তে যেতে চান। এই দেশে পড়াশোনার জন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আইইএলটিএস লাগে না। তবে টোয়েফল বা দেশটির নিজস্ব ভাষাদক্ষতার পরীক্ষা দিতে হয়।
ফ্রান্স
নিজস্ব সংস্কৃতি ও বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থার কারণে পড়াশোনার জন্য বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে ফ্রান্স বেশ জনপ্রিয় একটি দেশ। দেশটির অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি শিক্ষার্থীদের আইইএলটিএস ছাড়াই পড়াশোনার সুযোগ দেয়। দক্ষতার প্রমাণের জন্য ডিইএলএফ বা ডিএএলএফ দিতে হয়।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় বৈচিত্র্যপূর্ণ সাংস্কৃতিক পরিবেশ ও শিক্ষার উচ্চমান আছে। অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য এই দেশটি বেছে নেন। এই দেশটিতে পড়াশোনার জন্য আইইএলটিএসের প্রয়োজন হয় না। তবে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য ইংরেজি ভাষার বিকল্প পরীক্ষা যেমন পিটিই অ্যাকাডেমিক বা ক্যামব্রিজ ইংরেজি পরীক্ষা দিতে হয়।
কানাডা
বিশ্বের নানা দেশ থেকে প্রতিবছর অসংখ্য শিক্ষার্থী কানাডায় পড়াশোনা করতে যান। দেশটিতে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ ও শিক্ষার উচ্চমান আছে। কাডানার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই আইইএলটিএসের প্রয়োজন হয় না। তবে এর বিকল্প হিসেবে টোয়েফল, পিটিই অ্যাকাডেমিক বা ভাষাদক্ষতার অন্যান্য পরীক্ষার স্কোর দরকার হয়।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ড পড়াশোনা করতে গেলে আইইএলটিএস বাধ্যতামূলক নয়। যাঁদের আইইএলটিএস স্কোর নেই, তাঁদের ভাষাদক্ষতার অন্যান্য পরীক্ষার স্কোর থাকলে আবেদন করা যায়।
সিঙ্গাপুর
সিঙ্গাপুরে বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থা চালু থাকায় বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য এই দেশটি বেছে নেন। দেশটির অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আইইএলটিএসের পরিবর্তে ভাষাদক্ষতার বিকল্প পরীক্ষা বা তাদের নিজস্ব ভাষাদক্ষতার টেস্ট গ্রহণ করে।
মালয়েশিয়া
আইইএলটিএস স্কোর বাধ্যতামূলক না থাকায় উচ্চশিক্ষার জন্য বেশ জনপ্রিয় দেশ মালয়েশিয়া। এ ছাড়া দেশটিতে পড়াশোনার খরচও কম। আইইএলটিএস বাধ্যতামূলক না হলেও দেশটিতে পড়াশোনার জন্য ইংরেজি ভাষাদক্ষতার বিকল্প কোনো পরীক্ষার স্কোর দরকার হয়।
দক্ষিণ কোরিয়া
নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও সাংস্কৃতির কর্মকাণ্ডের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া বহুল পরিচিত একটি দেশ। দেশটির অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য আইইএলটিএস না থাকলে ইংরেজি ভাষাদক্ষতার বিকল্প পরীক্ষার স্কোর বা তাদের নিজস্ব ভাষাদক্ষতা পরীক্ষার স্কোর গ্রহণ করে।
জাপান
পড়ালেখা ও গবেষণার জন্য বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে সুর্যোদয়ের দেশ জাপান বেশ এগিয়ে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী জাপানে পড়ালেখা ও গবেষণার জন্য যেয়ে থাকেন। যেসব বিদেশি শিক্ষার্থীর আইইএলটিএস স্কোর নেই, তাঁদেরও উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেয় জাপান। দেশটির অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এমন শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষাদক্ষতার বিকল্প পরীক্ষার স্কোর বা নির্ধারিত অন্য কোনো পরীক্ষার স্কোর গ্রহণ করে।
চীন
দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ চীনে পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক সুযোগ আছে। দেশটির অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আইইএলটিএস স্কোরের ক্ষেত্রে শিথিলতা আছে। এর বিকল্প হিসেবে ইংরেজি ভাষাদক্ষতার বিকল্প পরীক্ষার স্কোর বা তাদের নিজস্ব ভাষাদক্ষতার স্কোরের প্রয়োজন হয়।