সচিবালয়ে আগুন: দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত নাশকতা?

গতকাল রাতে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে শুরু হওয়া আগুন ছয় ঘণ্টা ধরে জ্বলেছে, যা দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্রে এক গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে।

সচিবালয়ে আগুন: দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত নাশকতা?

শাহারিয়া আহমেদ নয়ন:
গতকাল রাতে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে শুরু হওয়া আগুন ছয় ঘণ্টা ধরে জ্বলেছে, যা দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থার প্রাণকেন্দ্রে এক গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। বাংলাদেশ ঢাকায় অবস্থিত সচিবালয়ে বুধবার রাতে সংঘটিত ভয়াবহ আগুনে অন্তত একজন নিহত এবং তিনজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রাত ১টা ৫০ মিনিটে শুরু হওয়া এই অগ্নিকাণ্ড ছয় ঘণ্টার প্রচেষ্টার পর সকাল ৮টা ৫ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আসে। সচিবালয়ের সাত ও আট নম্বর ভবন এ আগুনে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুনের ঘটনাটি একটি সাধারণ দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত নাশকতা, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

আগুনের সূত্রপাত হয় সাত নম্বর ভবনের ছয়তলায়, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত হয়। তবে কাঠ দিয়ে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ, যা নিষেধ করা সত্ত্বেও চালানো হয়েছিল, আগুনের বিস্তারে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি রুম বন্ধ থাকায় তালা ও জানালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়, যা উদ্ধারকাজকে বিলম্বিত করে।

আগুনের শিকার ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এ ভবনগুলোতে জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংরক্ষিত ছিল।
অন্যদিকে, আট নম্বর ভবনে অবস্থিত ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা ও সুরক্ষা সেবা বিভাগ এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এসব বিভাগে থাকা গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে যাওয়া দেশের প্রশাসনিক কাঠামোর জন্য গুরুতর ক্ষতি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ থেকে এগারো সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তিনি বলেছেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত নাশকতা, তা তদন্তের মাধ্যমে বের করা হবে।

বিভিন্ন মহল থেকে অগ্নিকাণ্ডকে পরিকল্পিত নাশকতা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। আগুনে ১৫ বছরের দুর্নীতি ও লুটপাটের নথিপত্র ধ্বংস হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মনে করেন, সচিবালয়ের মতো সুরক্ষিত ভবনে আগুন নিছক দুর্ঘটনা হতে পারে না। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় শিক্ষার্থী সুলতানা ইসলাম বলেছেন, "সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত হোক আগে, বাকিটা আমরা দেখে নিব।"জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ এই ঘটনায় সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শনাক্ত করা প্রয়োজন। প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হলে আমলাতন্ত্রে লুকিয়ে থাকা চাটার দলকে শেকড় থেকে উপড়ে ফেলতে হবে। জনগণও এই বিষয়ে সচেতন এবং প্রমাণ চায়।
এই অগ্নিকাণ্ড সরকারের সুরক্ষা ব্যবস্থার বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।


Cookie Consent
We serve cookies on this site to optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.