স্নাতকের (সম্মান) সনদ ছাড়াই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারে আরেক জনকে অ্যাডহক ভিত্তিতে প্রথম শ্রেণির চাকরিতে নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ১৮ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) শেখ সাদ আহমেদের সই করা অফিস আদেশে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি আইসিটি সেন্টারে সহকারী প্রোগ্রামার হিসেবে ছয় মাসের জন্য নিয়োগ পান।
নিয়োগপ্রাপ্ত শরিফুল ইসলাম রাজশাহীর কাঁটাখালী থানার চিনিকল বাজার এলাকার আব্দুস সোবহানের ছেলে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ভর্তি হয়েছিলেন। তবে সেখান থেকে তিনি পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া নিয়োগের সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর স্নাতক পাসের সার্টিফিকেট জমা দিতে পারেননি। স্নাতক পাসের সার্টিফিকেট ছাড়াই তাঁকে চাকরি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা বলছেন, এ ধরনের অস্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে এবং আমাদের স্বপ্নগুলোকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দিচ্ছে। উক্ত পদে নিয়োগের জন্য সার্কুলার প্রকাশ করা হলে অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীর মধ্য থেকে বাছাইয়ের সুযোগ থাকত।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, জরুরি ভিত্তিতে জনবলের প্রয়োজন থাকায় তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
সহকারী প্রোগ্রামার পদে শরিফুলের নিয়োগের যোগ্যতা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, আইসিটি সেন্টারের সহকারী প্রোগ্রামার পদটি প্রথম শ্রেণির পদ। এখানে নিয়োগ পেতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই স্নাতক পাস হতে হবে। আগের রেজিস্ট্রারের সময় এ নিয়োগ হয়েছিল। স্নাতকের সনদ ছাড়া যে নিয়োগ হয়েছে, এটি কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।
এ নিয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত শরিফুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘একটা তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটি এ নিয়োগের কোথায় বিচ্যুতি, সে বিষয়ে রিপোর্ট দেবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি কোনো বিচ্যুতি বরদাশত করব না।’
গত বছরের ১৮ নভেম্বর আইসিটি সেন্টারে শরিফুল ইসলাম ছাড়াও মোমেন খন্দকার অপি নিয়োগ পান। অপি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। নিয়োগের সময় তাঁর স্নাতকের ফলাফল প্রকাশ হয়নি।