ছাত্রদল নেতাদের জন্য নিয়মবহির্ভূতভাবে মাস্টার্স চালু করলো নোবিপ্রবি কৃষি বিভাগ


আব্দুল্লাহ আল তৌহিদ, নোবিপ্রবি সংবাদদাতা: দুই ছাত্রদল নেতার ছাত্রত্ব দেখাতে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) কৃষি বিভাগে নিয়মবহির্ভূতভাবে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) প্রোগ্রাম চালুর অভিযোগ উঠেছে। শীর্ষ পদপ্রত্যাশী ছাত্রদল নেতারা হলেন জাহিদ হাসান এবং মোঃ আমিনুল ইসলাম। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরে মাস্টার্সে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নোবিপ্রবি কৃষি বিভাগ। পরবর্তীতে এ বছরের ১৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে ৫ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তিযোগ্য হিসেবে ঘোষণা দেয় এবং ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ভর্তির নির্দেশ প্রদান। রেজিস্ট্রার দপ্তর এবং বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, ৫ শিক্ষার্থী মধ্যে শুধুমাত্র দুই ছাত্রদল নেতা দুটি গ্রুপে নিজেদের ভর্তি নিশ্চিত করে। প্ল্যান্ট বায়োকেমিস্ট্রি গ্রুপে জাহিদ হাসান এবং জেনেটিক এন্ড প্ল্যান ব্রিডিং গ্রুপে মোঃ আমিনুল ইসলাম। বর্তমানে সর্বনিম্ন ১০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালুর বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্দিষ্ট আইন থাকলেও মাত্র দুইজন শিক্ষার্থীর কোর্স রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের অক্টোবর-মার্চের সেমিস্টার চলমান রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী এবং রেজিস্ট্রার দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, নোবিপ্রবিতে আসন্ন ছাত্রদলের কমিটিকে কেন্দ্র করেই নিয়ম না মেনেই রাজনৈতিকভাবে কৃষি বিভাগে মাস্টার্স চালু করা হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের তথ্যমতে, বিভিন্ন বিভাগের স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) চালু এবং নিয়মনীতির বিষয়ে নোবিপ্রবিতে বোর্ড অফ এডভান্স স্টাডিজ (বোয়াস) নামের একটি বোর্ড রয়েছে। বোয়াসের সর্বশেষ ২১তম সভায় সর্বনিম্ন ১০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে কোনো মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যেখানে বলা হয় ১০ জনের কম সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে কোনো বিভাগ মাস্টার্সের প্রোগ্রাম চালু করতে পারবে না। 

শর্তের চেয়ে কম সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে মাস্টার্স চালুর বিষয়ে কৃষি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. গাজী মোহাম্মদ মহসিন বলেন, শর্ত যাচাই বাছাই করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাজ। আমাদের কাজ হচ্ছে ক্লাস, পরীক্ষা এবং গবেষণার কাজ করা। তবে কম সংখ্যক শিক্ষার্থী হলেও পরবর্তী সেমিস্টারে অন্য গ্রুপ থেকে আরো শিক্ষার্থী এর সাথে যুক্ত হবে। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তামজীদ হোসাইন চৌধুরী বলেন, বর্তমান আইন অনুযায়ী যে কোনো ডিপার্টমেন্টের মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি নিতে হলে সর্বনিম্ন ১০ জন হতে হবে। এর চেয়ে কম সংখ্যক নিয়ে মাস্টার্স চালু করতে আইনত বাধা আছে৷ কৃষি বিভাগে দুইজন শিক্ষার্থী নিয়ে চলমান মাস্টার্সের বিষয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে কেন এমন হলো। আমি এ বিষয়ে যাচাই বাছাই করে বিস্তারিত বলতে পারবো। 

নিয়মবহির্ভূতভাবে মাত্র দুইজন শিক্ষার্থী নিয়ে চালু হওয়া কৃষি বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের বৈধতার বিষয়ে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, আইন না মেনে চলার কোনো সুযোগ নেই৷ এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Cookie Consent
We serve cookies on this site to optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.