দীর্ঘ ছয় বছর পর পাবিপ্রবিতে বৈচিত্র্য ও আনন্দে উদযাপিত বাংলা নববর্ষ


‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’—রবীন্দ্রনাথের এই কালজয়ী আহ্বানেই যেন সাড়া দিয়ে জেগে উঠেছিল পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি)। মঙ্গল শোভাযাত্রা, ঐতিহ্যবাহী পিঠা ও লোকজ সংস্কৃতির ঝলকে উদযাপিত হলো বাংলা ১৪৩২ সালের নববর্ষ। পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে ছিল উৎসবের রঙ, সংস্কৃতির ছোঁয়া ও আনন্দের মিলনমেলা।

ছয় বছর আগে ২০১৯ সালে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষের উৎযাপন করা হলেও মাঝখানে করোনা, রোমজান থাকার কারনে গত কয়েকবছর এই উৎসব পালন করা সম্ভব হয়নি। এবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন আয়োজনে শিক্ষার্থীরা খুবই আনন্দিত। 

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় আয়োজনের অংশ হিসেবে শুরু হয় বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রার নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল আউয়াল। সঙ্গে ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শামীম আহসান , বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী।

শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের মূল ফটক থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মূল মঞ্চে এসে শেষ হয়। মহিশের গাড়ি, পালকি, মুখোশ, গ্রামীণ খেলনা, রঙিন ব্যানার, পটচিত্র ও বাদ্যযন্ত্রে মুখর ছিল পুরো আয়োজন।

উৎসব উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্কুলার অনুযায়ী ছাত্র হল, ছাত্রী হল, বিভাগ ও ক্লাবগুলোর জন্য আলাদাভাবে স্টল বরাদ্দ করা হয়। প্রতিটি স্টলে ছিল নিজস্ব সজ্জা, ঐতিহ্যবাহী পিঠা, দেশীয় খাবার, খেলনা ও হস্তশিল্প। দিনভর চলেছে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা—গান, নৃত্য, আবৃত্তি, নাটকসহ নানা আয়োজন।

ইইসিই বিভাগের শিক্ষার্থী ইউসুফ খান রাচি বলেন,
“এই প্রথমবার আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান দেখতে পারছি । শুনেছি এর আগে ২০১৯ সালে আমাদের ক্যাম্পাসে এরকম উৎসব মুখর পরিবেশে এমন আয়োজন হয়েছিল। নিজেদের হাতে স্টল সাজানো, পিঠা বানানো, বিক্রি করা—সব মিলিয়ে দারুণ অভিজ্ঞতা। বাংলা সংস্কৃতির এমন প্রাণবন্ত আয়োজন আমাদের মন ছুঁয়ে গেছে।”

সমাজকর্ম বিভাগের হাসিব বলেন,
“সারাদিন ক্যাম্পাসে একটা অন্যরকম অনুভূতি ছিল। সবাই যেন একে অপরের আপন। এই ধরনের আয়োজন আমাদের মধ্যে বন্ধন গড়ে তোলে, সংস্কৃতির সঙ্গে জুড়ে দেয়।”

নবীনতর পূর্বতন