আব্দুর রহিম, নোসক প্রতিনিধি: বাঙালিদের জাতিগত প্রধান উৎসব বাংলা নববর্ষ উদযাপনে দেশের শহর থেকে গ্রাম সব জায়গায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে নানা উৎসব আয়োজন। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী নোয়াখালী জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন এবং জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজন করা হয় নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিজয় মেলা, দেশীয় খাবার পরিবেশন সহ বাঙালি সংস্কৃতির নানা আয়োজন। তবে বিপত্তি ঘটেছে জেলার ঐতিহ্যাবহী ও সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নোয়াখালী সরকারি কলেজের নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা ঘিরে।
জানা যায়, বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। কিন্তু আনন্দ শোভাযাত্রার সম্মুখ সারিতে দেখা যায় একজন মেয়ে জামা ও হিজাবের সাথে পুরুষের লুঙ্গী পরা এবং একজন ছেলে শার্টের সাথে লুঙ্গি পরা। এমন সাজসজ্জা ও পোশাকের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। কলেজের পাবলিক ফেসবুক গ্রুপ গুলোতে এবং অনেক শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত আইডিতে বিষয়টি নিয়ে পোস্ট করলে কমেন্টবক্সে রীতিমতো হাস্যরস ও সমালোচনার ঝড় তুলে নেটিজেনরা। কমেন্ট বক্সে দেখা যায় কলেজের সাবেক ও বর্তমান অনেক শিক্ষার্থীরা বাংলা নববর্ষ উদযাপনে এমন সাজ কে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও বাংলা নববর্ষ কে অপমান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা বলছেন নববর্ষের শোভাযাত্রায় লাঙল, কাস্তে, হালখাতা এসবের প্রদর্শনী ছিলো না অথচ একজন মেয়েকে জামা ও হিজাবের সাথে লুঙ্গী পরিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা একটি অদ্ভুত সংস্কৃতি ছাড়া আর কিছুই নয়। এবং একটি ছেলেকে শার্টের সাথে লুঙ্গি পরিয়ে দেওয়া হয়েছে, অথচ শার্ট আমাদের দেশীয় সংস্কৃতি নয়। এছাড়াও নববর্ষের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গাওয়া হয় হতাশা ও বেদনার আক্ষেপের সুরে দেশাত্মবোধক গান।
গত ৯ এপ্রিল নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর জাকির হোসেন এবং নববর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে ১৪ এপ্রিল (সোমবার) সকাল ১০:১০ ঘটিকায় নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে কলেজের সকল বিভাগ থেকে ২০ জন করে শিক্ষার্থী নিয়ে বিভাগীয় প্রধানদের উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু এটা শুধু নোটিশেই সীমাবদ্ধ থাকলো। যথারীতি আজকেও যথাসময়ে শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়নি এবং অনেক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও কিছু কিছু শিক্ষার্থীদের শোভাযাত্রায় দেখা যায়নি। এদিকে অনেক দিন ধরে নোয়াখালী সরকারি কলেজে মাতৃভাষা দিবস, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস গুলো যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপিত না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।