ইবিতে স্বপ্নবিতানের উদ্যোগে ‘বৈশাখীয়ানা উৎসব-১৪৩২’


সংগীত কুমার, ইবি প্রতিনিধি:
বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ উপলক্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দিনব্যাপী ‘বৈশাখীয়ানা-১৪৩২’ উৎসব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘স্বপ্নবিতান-ইবি পরিসর’-এর উদ্যোগে হালখাতার আদলে এই উৎসব বসবে আগামী ২০ ও ২১ এপ্রিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা প্রাঙ্গণে।

“বৈশাখে বর্ণে, সুরে, স্বাদে—উৎসব হোক হৃদয়জুড়ে!” এই স্লোগানকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিতব্য এ উৎসবকে ঘিরে সাজানো হয়েছে বাঙালির গ্রামীণ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিনির্ভর বৈচিত্র্যপূর্ণ আয়োজন।

উৎসবে থাকছে নাগরদোলা, চরকি, পুতুলনাচ, দোলনা ও গরুর গাড়ির মতো হারিয়ে যেতে বসা সব গ্রামীণ বিনোদনের আয়োজন। থাকছে ঐতিহ্যবাহী বাউল গানসহ মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পাশাপাশি ক্যাম্পাস ও স্থানীয় তরুণ উদ্যোক্তাদের পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয়, মৃৎশিল্প, হস্তশিল্প, ময়রাদের গরম গরম মিস্টান্ন, ঐতিহ্যবাহী পান্তাভাত, দই-চিড়া সহ চমৎকার সব আয়োজন।

উৎসবের বিষয়ে স্বপ্নবিতান ইবি-পরিসরের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব রানা বলেন,
“বৈশাখ আমাদের আত্মপরিচয়ের উৎসব। এই উৎসব শুধু আনন্দ নয়, বরং আমাদের শিকড়ের সঙ্গে নতুন করে সংযোগ তৈরির একটি উপলক্ষ। ‘বৈশাখীয়ানা-১৪৩২’ আমাদের সেই সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও লোকজ শিল্পকে কেন্দ্র করেই সাজানো হয়েছে, যা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। আমরা চেয়েছি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ও উদ্যোগে একটি প্রাণবন্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক আয়োজন গড়ে তুলতে। আমাদের বিশ্বাস, এই উৎসব সবার হৃদয়ে রঙ ছড়াবে এবং নতুন বছরে সাম্যের, সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেবে।”

স্বপ্নবিতানের আহ্বায়ক আরিফা ইসলাম ভাবনা বলেন, “বৈশাখ মানে শুধু নতুন বছর নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি, শিকড় ও অনুভবকে ছুঁয়ে দেখার সময়। বৈশাখীয়ানা-১৪৩২ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা চেয়েছি হারিয়ে যেতে বসা লোকজ ঐতিহ্যকে আবার সামনে নিয়ে আসতে। এই উৎসব শুধু আনন্দের নয়, শিক্ষারও; এখানেই শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা, উদ্যোগ ও সংস্কৃতির প্রতি দায়বদ্ধতা প্রকাশ পায়। আমরা চাই, সকলের অংশগ্রহণে এটি হয়ে উঠুক একটি মিলনমেলা, যেখানে বৈচিত্র্যের মাঝেই থাকুক বাঙালিয়ানা ও ঐক্যের রং।”

উৎসবটি সবার জন্য উন্মুক্ত এবং এতে ইবির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়েছে আয়োজক সংগঠন স্বপ্নবিতান। আয়োজকরা আশা করছেন, বৈশাখীয় এই উৎসব একদিকে যেমন বাঙালির লোকজ সংস্কৃতিকে ঘনিষ্ঠভাবে ছুঁয়ে দেখার সুযোগ করে দেবে, তেমনি শিক্ষার্থীদের স্বকীয় উদ্যোগ ও সৃজনশীলতাকে তুলে ধরার এক অনন্য প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠবে।

নবীনতর পূর্বতন