রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি: বৃহস্পতিবার বিকেল, ব্যাগ গুছিয়ে রওনা দিতে চান অনেকেই। কেউ ফিরছেন রাজবাড়ীর গ্রামে, কেউ কুষ্টিয়ার শহরে। আর শনিবার রাতে ফিরবেন রাজশাহী শহরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কিংবা ভাড়া বাসায়। এভাবেই সপ্তাহান্তে ঘরে ফেরা আর ফেরার একটা চক্র তৈরি হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবীদের জীবনে। কিন্তু সেই চক্রটা বারবার ভেঙে দিচ্ছে একটিমাত্র সিদ্ধান্ত—মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধ দিন শনিবার।
রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শত শত শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী রাজশাহীতে পড়াশোনা ও পেশাগত কারণে থাকেন। কিন্তু মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের শনিবার বন্ধ থাকায় সপ্তাহান্তে বাড়ি ফেরা কিংবা ফেরাটা হয়ে উঠছে এক কঠিন যাত্রা।
এই সংকট থেকে উত্তরণের আশায় আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এবং রাজবাড়ী জেলা সমিতি, রাজশাহী—একত্রে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
স্মারকলিপিতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি উত্থাপন করা হয়—
১। মধুমতি এক্সপ্রেসের সাপ্তাহিক ছুটি শনিবার থেকে পরিবর্তন করে অন্য কোনো দিনে নিতে হবে।
২। রাতের ট্রেনগুলোর জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে ন্যূনতম ১ মিনিটের স্টপেজ নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, মধুমতি এক্সপ্রেস রাত ১০টা ৪০ মিনিটে রাজশাহী পৌঁছালেও রাবি স্টেশনে না থামায় অনেককে গভীর রাতে নেমে দূরপথ হেঁটে যেতে হয়, যা নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
রেলের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনার পর প্রতিনিধিরা বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো তুলে ধরেছি। তবে যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে শিক্ষার্থীরা রাজপথে নামবে এবং কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।”
শুধু একটা স্টপেজ বা একটি দিনের পরিবর্তন নয়, এটি একটি বৃহত্তর জনস্বার্থের প্রশ্ন—নিরাপত্তা, যাতায়াতের সুবিধা এবং শিক্ষার্থীদের জীবনের সঙ্গে যুক্ত এক বাস্তব প্রয়োজন। এখন দেখার পালা, রেল কর্তৃপক্ষ কতটা দ্রুত ও মানবিকভাবে বিষয়টি বিবেচনায় নেয়।