জবির ১৩ বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ আটকা পুনঃবিজ্ঞপ্তির চক্রে


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইতিহাস বিভাগ। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি প্রভাষক পদে ৩ জন শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এরপর গত বছরে জুনের শুরুতে নিয়োগের পুনঃবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় এবং সর্বশেষ চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি আবারও পুনঃবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এরই মধ্যে পার হয়েছে দুই বছরের অধিক সময়। দায়িত্ব পালন করে গেছেন দুই উপাচার্য। কিন্তু এখনো পূরণ হয়নি শিক্ষকের সেই শূন্যপদ। এভাবে জবির ১৩টি বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম পুনঃবিজ্ঞপ্তির চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে। ফলে একদিকে যেমন পূর্বের শূন্য পদ পূরণ হচ্ছে না, অন্যদিকে নতুন আরো পদ খালি হচ্ছে। এতে করে দিনদিন বিভাগগুলোতে শিক্ষক সংকট আরো প্রকট হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বেশিরভাগ বিজ্ঞপ্তি ২ থেকে ৩ বছর আগের। কিছু নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ক্ষেত্রে সাবেক প্রয়াত উপাচার্য ইমদাদুল হকের সময় প্ল্যানিং কমিটি থেকে অনুমোদন হয়ে বাছাই বোর্ডও গঠিত হয়েছিল। কিন্তু এর মধ্যে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বরে উপাচার্য ইমদাদুল হক ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে তিন মাস চিকিৎসাধীন থেকে মৃত্যুবরণ করেন। পরে উপাচার্য সাদেকা হালিম দায়িত্বে এসে সবগুলোর পুনঃনিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন। সাদেকা হালিম দায়িত্ব নেওয়ার ৬ মাসের মাথায় কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। পরে সরকার পতনের ধারাবাহিকতায় তিনিও পদত্যাগে বাধ্য হন। সর্বশেষ অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম দায়িত্ব নেওয়ার পর চলতি বছর ৫ জানুয়ারি ১৩টি বিভাগে ২১টি পদে পুনঃবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।

জবির দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হাফিজুল ইসলাম বলেন, একটা বিভাগে যখন শিক্ষক সংকট দেখা দেয়, তখনই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। দেখা যায়, সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ২ থেকে ৩ বছর লেগে যাচ্ছে। এই সময়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বিভাগের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে। ব্যাহত হচ্ছে একাডেমিক কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলোর একটা সুরাহা করা দরকার। এদিকে শিক্ষক নিয়োগে এই দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পুনঃনিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়টি খারাপ প্র্যাকটিস হিসাবে দেখছেন তারা। এভাবে চলতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কাজে সমন্বয়হীনতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, আমরা মনে করছি, আগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিগুলোতে সবার বাধাহীনভাবে আবেদনের সুযোগ ছিল না। এখন পরিবর্তিত সময়ে সবাইকে সমান সুযোগ করে দিতে পুনঃবিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। আমাদের কাজ চলমান রয়েছে। শিগগিরই নিয়োগের মাধ্যমে শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণ করা হবে।

Cookie Consent
We serve cookies on this site to optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.