ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) গাজা অভিমুখী নৌযান থেকে ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক অপহৃত বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও লেখক শহিদুল আলমের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুর দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বর থেকে এ মিছিল শুরু করেন তারা। পরে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটক দিয়ে বেরিয়ে শাঁখাবাজার ও বাহাদুর শাহ পার্ক সংলগ্ন বিশ্বজিৎ চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে এ মিছিল শেষ হয়।
এসময় তারা ‘ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’ ; ‘প্যালেস্টাইনে মানুষ মরে, জাতিসংঘ কি করে’ ; ‘স্বপ্ন দেখি প্রতিদিন, স্বাধীন হবে ফিলিস্তিন’ ; ‘তুমি কে আমি কে, প্যালেস্টাইন প্যালেস্টাইন’ ; ‘শহিদুল আলম আটক কেন, জাতিসংঘ জবাব চাই’ এসব স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
জবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও আপ বাংলাদেশের নেতা মাসুদ রানা বলেন, ‘২০২৩ সাল থেকে প্রায় ২ বছরের বেশি সময় ইসরায়েল ফিলিস্তিনের ওপরে হামলা করে চলেছে। আমাদের ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ভাই ও বোনেরা, সারা পৃথিবীর মানুষ তোমাদের সাথে আছে। আমরা বলে দিতে চাই যারা এর মদদদাতা তাদের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার থাকবো। আমরা ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা বাহিনীদের একা ছেড়ে দিব না। যদি দরকার হয় আমরা গাজায় লং মার্চ দিতেও প্রস্তুত আছি।’
শাখা বাগছাস আহ্বায়ক মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘ফিলিস্তিন শুধু একটি ভূখণ্ড নয়, পৃথিবীর মুসলিমদের অনুভূতির নাম। ইসরায়েল বাহিনী শুধু বর্বরোচিত হামলা করছে না, সমস্ত খাবার ও সাহায্য বন্ধ করে দিচ্ছে। সর্বশেষ বাংলাদেশি ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলমকে গ্রেফতার করেছে। আমরা জবি শিক্ষার্থীরা শহিদুল আলম সহ সকলের মুক্তি চাই এবং ইন্টেরিমকে বলতে চাই, এর বিপক্ষে আন্দোলন গড়ে তুলতে যা করার আপনারা তাই করবেন।’
শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম মারুফ বলেন, ‘পৃথিবীর মানচিত্র থেকে ফিলিস্তিন নামক দেশটি গায়েব হয়ে যাচ্ছে। যারা শহিদ হচ্ছে তাদের মধ্যে অধিকাংশ নারী-শিশু। যেই গণহত্যা চলছে তার বিপক্ষে জাতিসংঘের নিশ্চুপ। এখন আর কারোর দিকে মুখ চেয়ে থেকে সমাধান আসবে না। আমরা অন্তর্বতীকালীন সরকারকে বলতে চাই শহিদুল আলমের মুক্তির দাবিতে শক্ত হতে হবে এবং ফিলিস্তিনের পাশে দাড়াতে হবে।’
শাখা ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি ইভান তাহসীব বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী বাংলাদেশি ফটো সাংবাদিক শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু তার মুক্তির জন্য এই অন্তর্বতীকালীন সরকার এখনও নিশ্চুপ। যা এ জাতির জন্য লজ্জাজনক। এখন চুপ করে শুধু শুনবো আর পাশে দাঁড়াবো সেই সময় নেই। আমাদের ফিলিস্তিনে চলা গণহত্যার পক্ষে অথবা বিপক্ষে দাঁড়াতে হবে।’
শাখা ছাত্রশিবির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম আরিফ বলেন, ‘শহীদুল আলম নিজেই বলেছেন, তাকে অপহরণ করা হয়েছে। শুধু তাকে না, অনেক মানবাধিকার কর্মীকে অপহরণ করা হয়েছে। আমরা জবি শিক্ষার্থীরা শহিদুল আলমসহ বাকিদের দ্রুত মুক্তি চাই।’
এর আগে বুধবার এক ভিডিও বার্তা সূত্রে জানা গেছে, ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) গাজা অভিমুখী নৌযান শহিদুল আলমকে ইসরায়েলি বাহিনী অপহরণ করে।
প্রসঙ্গত, ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন দীর্ঘদিন ধরে অবরুদ্ধ গাজার মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে এসব নৌবহর প্রায়শই ইসরায়েলি বাহিনীর বাধা ও দমননীতির শিকার হয়।