রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসে এখনো রাজনীতির ছোঁয়া

রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসে এখনো রাজনীতির ছোঁয়া
 

পাবিপ্রবি প্রতিনিধি: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন থেকে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে বুঝা যাবেনা এখানে রাজনীতি বন্ধ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং একাডেমিকভবনের বিভিন্ন দেয়ালে এখনো বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নাম লেখা রয়েছে। যেগুলো দেখে বুঝার উপায় নাই বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ। এসব লেখা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৩ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় সকল প্রকার রাজনীতি নিষিদ্ধ করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ৫ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট এর মধ্যে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং একাডেমিক ভবনের বিভিন্ন দেয়ালে নিজেদের দলের নাম লিখে ফেলেন। ১৩ আগস্ট রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল প্রশাসক অথবা রাজনৈতিক দলগুলো পক্ষ থেকেই এই লেখাগুলো মুছে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে প্রবেশ করলেই দেখা যায় সেখান ছাত্রশিবির এবং ছাত্রদল লেখা রয়েছে। পাঁচতলা হলের দুই ব্লক ঘুরে দেখা যায় বিভিন্ন রুমের সামনে (৬০) বার ছাত্রশিবির লেখা রয়েছে। ছাত্রদল লেখা রয়েছে (১৫) বার। এছাড়াও হলের বিভিন্ন রুমে এখন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নাম এবং নেতাদের নাম লেখা রয়েছে।  
হল ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের প্রকৌশল ভবনের নিচতলার সামনের দেয়ালে এবং বিজ্ঞান ভবনের সামনের দেয়ালে ছাত্রদল লেখা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিমুক্ত হওয়ার পরেও এখনও রাজনৈতিক দলের চিহ্ন থাকার সমালোচনা করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পরেই হল প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত ছিল রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর এসব লেখা মুছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। ইইসিই বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মেরাজুল ইসলাম বলেন আমাদের ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও, এখনও একাডেমিক বিল্ডিং এবং হলে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নাম লেখা রয়েছে। এটি একাডেমিক পরিবেশে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করতে হলে এসব নাম মুছে ফেলা জরুরি। প্রশাসনকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে যেন ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ বজায় থাকে। সিএসই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন ক্যাম্পাসে রাজনীতিমুক্তির ঘোষণা কেবল কথায় সীমাবদ্ধ থাকলেই চলবে না বরং প্রশাসনের উচিত দ্রুত এসব দেয়াল লিখন, স্লোগান এবং রাজনৈতিক চিহ্ন মুছে ফেলার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা। পাশাপাশি, শিক্ষার্থীদের জন্য এমন একটি পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন যেখানে তারা সবাই নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নে সৃজনশীলতা বিকাশে মনোনিবেশ করতে পারে। 
হলে রাজনৈতিক দলগুলোর নাম লেখা থাকার বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ড আমিরুল ইসলাম বলেন এ বিষয় নিয়ে প্রক্টর মহাদয়ের সাথে আমার কথা হয়েছিল আগে স্যার বলেছেন আমাদের হল এবং একাডেমিক ভবন রঙ করা হবে খুব শীঘ্রই। প্রক্টর স্যার নির্দেশ দিলেই আমরা হলের দেয়ালে এসকল লেখা মুছে দিব। একাডমিক ভবনের লেখার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড কামরুজ্জামান খান বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকগুলো কাজ চলমান শীঘ্রই হল এবং একাডেমিক ভবন এ নতুন রঙ এর কাজ করা হবে তখন দেয়ালের লেখাগুলো মুছে দেওয়া হবে। তবু আমরা চেষ্টা করব খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার। তিনি শিক্ষার্থীদের সহযোগীতা চেয়েছেন এবং সবাইকে একটু ধৈর্য ধরতে বলেছেন।  



/মনিরুল ইসলাম 
নবীনতর পূর্বতন