পাবিপ্রবিতে প্রদর্শিত হলো "বন্যা প্রতিরোধী স্বল্প মূল্যের আবাসন" প্রকল্প

পাবিপ্রবিতে প্রদর্শিত হলো "বন্যা প্রতিরোধী স্বল্প মূল্যের আবাসন" প্রকল্প

পাবিপ্রবিতে প্রদর্শিত হলো "বন্যা প্রতিরোধী স্বল্প মূল্যের আবাসন" প্রকল্প

পাবিপ্রবি প্রতিনিধি: প্রাকৃতিক দূর্যোগে মানবজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করল পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) স্থাপত্য বিভাগ। বন্যাপ্রবণ এলাকায় মানুষের টিকে থাকার টেকসই সমাধান এবং গৃহপালিত প্রাণীর সুরক্ষায় স্বল্পমূল্যের আবাসন তৈরির উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে "বন্যা প্রতিরোধী স্বল্প মূল্যের আবাসন" প্রকল্পের প্রদর্শনী।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ১০ টা থেকে সারাদিন ব্যাপী চলতে থাকে এই প্রদর্শনী । 
প্রদর্শনীতে বন্যাপ্রবণ এলাকার মানুষের টিকে থাকার কৌশল, স্বল্পমূল্যে আবাসন নির্মাণের ধারণা এবং দুর্যোগের সময় গৃহপালিত পশু রক্ষার প্রযুক্তি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এতে শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবিত মডেল প্রদর্শন করেন এবং দর্শনার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।শিক্ষার্থীরা দেখান কীভাবে সীমিত খরচে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কার্যকর ভূমিকা রাখা যায়। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং দর্শনার্থীরা, যারা প্রশংসা করেছেন এই উদ্যোগের সৃজনশীলতা এবং ব্যবহারিক সম্ভাবনার । 

স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী বাধঁন বলেন, "আমরা বন্যাপ্রবণ এলাকার মানুষের জন্য এমন একটি আবাসন ব্যবস্থা ডিজাইন করেছি, যা একাধিকভাবে ব্যবহার করা যাবে। বন্যার সময় বাড়ির দ্বিতীয় তলায় নিরাপদ আশ্রয় নেওয়া সম্ভব হবে। দ্বিতীয় তলাটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যে, বন্যার পানি বাড়ির গ্রাউন্ডফ্লোর ডুবে গেলেও ওপরের অংশ সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকবে। শুধু তাই নয়, বন্যার সময় না থাকলে এই দ্বিতীয় তলাটি স্টোর রুম বা অন্যান্য প্রয়োজনে ব্যবহার করা যাবে। এটি মানুষের জীবনধারায় একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে। এই ডিজাইনের মাধ্যমে আমরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে চাই।"

আরেক শিক্ষার্থী রিদয় আলম উল্লাস বলেন, "আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল এমন একটি স্থাপনা তৈরি করা, যা শুধু দুর্যোগ মোকাবিলা নয়, বরং মানুষের দৈনন্দিন জীবনেও কাজে লাগবে। আমরা বাড়ির ডিজাইন গুলো এমন ভাবে করেছি যে,বন্যার সময় মানুষ দ্বিতীয় তলায় অবস্থান করতে পারবে, যেখানে তাদের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা থাকবে। একই সঙ্গে গৃহপালিত প্রাণীদের জন্য আলাদা স্থান রাখা হয়েছে। আর বন্যা না থাকলে দ্বিতীয় তলাটি খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণ বা বাড়ির প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম রাখার জায়গা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। আমরা বিশ্বাস করি, এই প্রকল্প বন্যাপ্রবণ এলাকার মানুষের জীবনযাত্রায় স্থায়ী পরিবর্তন আনবে এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।"

স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অদিতি বিশ্বাস বলেন 'আমরা সকলেই অবগত আছি আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছিল এবছর। আমরা পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের পক্ষ থেকে এই সকল বন্যা কবলিত দের আবাসস্থল নিয়ে যে নানা রকম সমস্যা থাকে সে বিষয় নিয়ে পাবনা জেলার বিভিন্ন এলাকা এবং সিরাজগঞ্জের বন্যা কবলিত এলাকা ঘুরে ঘুরে তাদের সমস্যা বের করি। এই সমস্যা গুলোর সমাধানের লক্ষ্যেই আমাদের আজকের এই বন্যা প্রতিরোধী স্বল্প মূল্যের আবাসন প্রকল্প।

তিনি আরও বলেন,আবাসন প্রকল্পের জন্য এমন স্থানে ভূমি নির্বাচন করতে হবে যা বন্যা ঝুঁকিমুক্ত। স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে স্বল্প ব্যয়ে টেকসই ঘর তৈরি করা সম্ভব। বন্যা প্রতিরোধে উন্নত প্রযুক্তি যেমন উঁচু ভিত্তি, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, এবং জলবায়ু-সহনশীল নকশা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এই বিষয় গুলো নিয়ে আমদের শিক্ষার্থীরা কাজ করে যাচ্ছে।'
Cookie Consent
We serve cookies on this site to optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.