ইবিতে শিশু আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে গায়েবানা জানাজা


ইবি প্রতিনিধিঃ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শিশু আছিয়ার ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ‘প্রতিবাদী সমাবেশ’ ও ‘গায়েবানা জানাজা’ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচি পালন করেন।

এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি শাখার সমন্বয়ক এস. এম. সুইট, সহ-সমন্বয়ক তানভীর মণ্ডল, গোলাম রাব্বানীসহ সমন্বয়ক পরিষদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবাদী সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, “ছোট্ট আছিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যু আমাদের ব্যথিত করেছে। ধর্ষণের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক কোনো শাস্তির দৃষ্টান্ত না থাকাটাই আজ ধর্ষণের জন্য ও আছিয়ার মৃত্যুর জন্য দায়ী। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি বাংলাদেশে আর কোনোভাবেই চলতে দেওয়া হবে না। ধর্ষকদের এমন কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এই কাজ করার দুঃসাহস না দেখায়।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির অন্যতম সহ-সমন্বয়ক গোলাম রাব্বানী বলেন, “মহান আল্লাহ যেন আছিয়ার গুনাহ মাফ করে তাকে শাহাদাতের মর্যাদা দান করেন। শিশু আছিয়ার মৃত্যুর জন্য দায়ী ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি—মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের কাছে আমাদের প্রশ্ন, আপনারা করছেন টা কী? আগের সরকারের আমলে নাহয় বিভিন্ন কায়দায় ধর্ষকদের বাঁচানো হতো, কিন্তু আপনারা কী করছেন? আপনারা দুই হাজার শহীদ ভাইবোনের রক্তের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় বসেছেন। মানুষ এখন ওই ছয় মাসের আইনের কথা শুনতে চায় না, মানুষ ধর্ষণের ঘটনা ঘটার সাথেই ধর্ষকের শাস্তি চায়। যদি মানুষের অনুভূতি বুঝতে না পারেন, তাহলে গদি ছেড়ে দিন।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস. এম. সুইট বলেন, “বিগত স্বৈরাচারী সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু তৎকালীন সরকার তার কোনো বিচার নিশ্চিত করতে পারেনি। আমরা দেখেছি কীভাবে তনুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। আমরা আরেকটি নাম ভুলে গেছি, ঢাকার বসুন্ধরার মালিক সায়েম তানভীর দ্বারা মুনিয়াকে ধর্ষণ। সেই তানভীরের বিচার যদি আমরা নিশ্চিত করতে পারতাম, যদি প্রতিবাদের ভাষা জারি রাখতে পারতাম, সরকারের যদি সদিচ্ছা থাকতো, তাহলে আছিয়ার মতো বোনদের এরকম পরিণতি হতো না।”

তিনি আরও বলেন, “আছিয়ার ধর্ষণের সাথে যারা অভিযুক্ত, তাদের যতদিন না শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে, ততদিন আমরা মাঠ ছাড়ব না। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, সাত দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। আগস্টের আগে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি ছিল, সেই সংস্কৃতি থেকে যদি আমরা বের হতে না পারি, তাহলে আমাদের জুলাই স্পিরিট ব্যাহত হবে। আজকে আমাদের বোন আছিয়ার জন্য দাঁড়াতে হয়েছে, কালকে আরেক বোনের জন্য দাঁড়াতে হবে; এভাবে আর চলতে পারে না। সরকার যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে পারে, তাহলে এই ধরনের কর্মকাণ্ড অনেকটাই কমিয়ে ফেলা সম্ভব।”

নবীনতর পূর্বতন