মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি প্রতিনিধি: ঢাকা সেনানিবাসের সেনাপ্রাঙ্গণে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির আয়োজনে “ব্লু ইকোনমি: বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে সামুদ্রিক সম্পদের সম্ভাবনা” শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম. নাজমুল হাসান। প্লেনারি সেশনে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর রিয়ার এডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী, যেখানে প্রধান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনেস্কো ওশান গভর্নেন্স চেয়ারধারী ও ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের অধ্যাপক ড. পিয়েরে ফেইলার। চীনের ন্যাশনাল ওশান টেকনোলজি সেন্টারের অধ্যাপক ড. টেং জিন, মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি পুত্রার অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নাত্রাহ এফ. বি. মো. ইখসান এবং ফ্রান্সের ওশানোগ্রাফি বিশেষজ্ঞ ড. তনিয়া অ্যাস্ট্রিড ক্যাপুয়ানোও তাদের গবেষণামূলক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। তিনি বলেন,
“আজকের এই অনুষ্ঠানে আসতে পেরে নিজেকে খুব গর্বিত ভাবছি। বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল। বাংলাদেশের মতো একটি সমুদ্র বিনিয়োগের হটস্পট অঞ্চলে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনে দেশের মেরিটাইম সেক্টরের প্রতিনিধিত্বকারী হবে।”
দিনব্যাপী তিনটি প্যারালাল টেকনিক্যাল সেশনে “ব্লু ইকোনমি সেক্টর”, “ওশান গভর্নেন্স” ও “ওশান সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি” বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রথম সেশনে ইউনডিপি’র জেলা জলবায়ু পরিবর্তন সমন্বয়কারী ড. মো. মজিবুর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. ইয়ামিন হোসেন ও বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম, দ্বিতীয় সেশনে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. উপল আদিত্য ঐক্য, প্রাইম ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও প্রভাষক নিশাত তারান্নুম, এবং তৃতীয় সেশনে বুয়েটের অধ্যাপক ড. যোবায়ের ইবনে আউয়াল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক কে. এম. আজম চৌধুরী ও ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক অ্যান্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের রিসার্চ অ্যাসিস্টেন্ট অর্পিতা রায় শাওন অংশগ্রহণ করেন। প্রতিটি সেশনের সভাপতিত্ব করেন ক্যাপ্টেন কাজী আলী ইমাম, অধ্যাপক ড. এম. এ. ওহাব, অধ্যাপক ড. মো. সাদিকুল বারী ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজির হোসেন।
সংস্থাগুলি বন্দর কর্তৃপক্ষ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, শিপইয়ার্ড, মেরিটাইম একাডেমি, বেসরকারি সংস্থা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
উক্ত সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি রিয়ার এডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী বলেন,
“বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি একটি ইউনিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ধীরে ধীরে অগ্রগতির শীর্ষে উঠছে। আগামী দিনে দেশের মেরিটাইম সেক্টরকে নেতৃত্ব দেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ই। পার্মানেন্ট ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হলে আমরা অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাব। আমাদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা গবেষণা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে সমুদ্র রুটে উজ্জ্বল, সম্ভাবনাময় উন্নয়নের নতুন অধ্যায় রচনা করবে।”
সমাপনী গণমাধ্যমে সেমিনার থেকে উঠে আসা অন্যতম আহ্বান ছিল—একটি বাস্তবমুখী রোডম্যাপ প্রণয়ন করা, যাতে বাংলাদেশের “ব্লু ইকোনমি” টেকসই উন্নয়নের নতুন রোল মডেলে পরিণত হয়।