সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও হুমকি ; অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর শাস্তি দাবি

জাবিপ্রবি প্রতিনিধি:
জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ, অবমাননাকর, বিভ্রান্তিকর ও হুমকিস্বরূপ মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনগত দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি। গত ১৮ এপ্রিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. আব্দুল মাজিদ হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক মন্তব্যে সাংবাদিকদের ‘মাদকাসক্ত’, ‘অপ্রয়োজনীয়’, ‘দখলদার’ বলে অভিহিত করেন এবং সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে হামলার হুমকি দেন।

২১ এপ্রিল (সোমবার) এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর বরাবর বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দেন সংগঠনটি।৷ অভিযোগে বলা হয়, এ ধরনের উস্কানিমূলক, কুরুচিপূর্ণ, অবমাননাকর, বিভ্রান্তিকর ও হুমকিস্বরূপ সন্ত্রাসমূলক মনোভাব শুধু সাংবাদিকদের নয়, বরং পুরো বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রদায়ের জন্য হুমকি সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও পরিবেশ নষ্ট করছে এবং এটি একটি সাংবিধানিক পেশার ওপর চরম অবজ্ঞা। অভিযোগপত্রে উল্লেখ দাবিতে জানানো হয়— অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ও কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ। সাংবাদিক সমিতির কার্যালয় ও সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিতক করতে হবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মো. আব্দুল মাজিদ হোসেনের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে বলেন, ‘শিক্ষার্থী হিসেবে খারাপ কথা বা ভালো কথা বলার অধিকার আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার কমেন্টে উল্লেখ করা অভিযোগগুলোর সত্যতা আছে কিনা জানতে চাইলে সে সদুত্তর না দিতে পেরে বলেন, তামাক যে মাদক আমি জানতাম না। পানের সাথে যেটা খায় সেটাকে তামাক বলে। এটা কি মাদক? এ সম্পর্কে আমার জানা নেই এবিষয়ে আরো স্টাডি করতে হবে।’ এরপর সে ব্যস্ততা দেখিয়ে পারে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। 

সাংবাদিক সমিতিতে হামলার হুমকিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক জাবিপ্রবি শিক্ষার্থী লিটন আকন্দের ফেসবুক আইডি মেনশন করায় তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে গেটে নাম না থাকার বিষয়ে আমি ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলাম তাই হয়তো প্রতিনিধিত্বকারী মনে করে তার মন্তব্যে মেনশন করেছে। তার ব্যক্তিগত কোনো সমস্যা থাকতে পারে কিন্তু এ মন্তব্যের সাথে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। আর আমরা দেখি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি ক্যাম্পাসের জন্য কাজ করে। কোটা আন্দোলনে ও বড় ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু সে এমন মন্তব্য কেন করেছে তা আমার জানা নেই।’

এ বিষয়ে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও চ্যানেল ২৪-এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থী যেভাবে একটি নিবন্ধিত সংগঠনকে ও সাংবাদিকদের নিয়ে যে মন্তব্য করছে সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। এটি কেবল ব্যক্তি সাংবাদিকদের নয়, বরং সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও মর্যাদার ওপর সরাসরি আঘাত। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

জাবিপ্রবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. মোহাম্মদ সাদীকুর রহমান বলেন, ‘সে যে কমেন্টটা লিখেছে তা আমি পড়েছি। আমার খুব খারাপ লেগেছে। এটা সাংবাদিকদের মানহানিকর একটা কথা বলেছে। এ বিষয়ে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করব৷ ’ সাংবাদিক সমিতির নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, প্রশাসন যদি এ ঘটনায় নিষ্ক্রিয় থাকে, তাহলে তারা প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য হবেন।

নবীনতর পূর্বতন