যবিপ্রবি প্রতিনিধি: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)-এর চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) একাধিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা বুধবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, মানববন্ধন এবং সড়ক অবরোধের মাধ্যমে তাদের সংহতি প্রকাশ করেন।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ ঘোষণা দেয়।
এ বিষয়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড বায়োটেকনোলজি
বিভাগের শিক্ষার্থী জালিস মাহমুদ বলেন, কুয়েটে শিক্ষার্থীদের উপরে সন্ত্রাসী হামলা, ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারসহ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিসমূহ না মেনে নিয়ে বর্তমান ভিসি মাসুদ স্বৈরাচারী কায়দায় নিজের প্রভাব-প্রতিপত্তি জাহির করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। যেখানে একজন উপাচার্যের দায়িত্বই হল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার সমূহের বাস্তবায়ন, বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা ও গবেষণার সূতিকাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, শিক্ষার্থীদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখা। সেখানে নিজের শিক্ষার্থীদের জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে, বরং ভাড়াটিয়া গুন্ডা ও সন্ত্রাসীদেরকে শিক্ষার্থীদের পেছনে লেলিয়ে দিয়ে তাদেরকে হামলা করার অভিযোগ পর্যন্ত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মাসুদের বিরুদ্ধে । তাই আজ সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কুয়েটের অনশনকৃত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে STANDS WITH KUET কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্লাস, ল্যাব ও পরীক্ষা বর্জন, মানববন্ধন, প্রতীকী অনশন, ব্লকেড ইত্যাদি বাস্তবায়ন করছে। তারই অংশ হিসেবে আমরা যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আজকের ক্লাস, ল্যাব ও পরীক্ষা বর্জন করেছি। আমরা এই স্বৈরাচারী ভিসিকে অতিদ্রুত পদত্যাগ কিংবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক তার বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাও সরাসরি কুয়েটে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের কর্মসূচি আরো জোরদার ভাবে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
কেমিকৌশল বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী রায়হান বলেন, কুয়েট শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশনের সাথে সংহতি জানিয়ে আজকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছি। ভিসি হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক । কিন্তু নিজ ক্যাম্পাসকে বাইরের সন্ত্রাসীদের হাত থেকে উনি রক্ষা করতে পারেন নাই। বরং পানি,বিদুৎ সংযোগ অফ করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বাধ্য করা ও শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করার মধ্যে দিয়ে ভিসি পদে থাকার সমস্ত নৈতিক অধিকার উনি হারিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ভিসির পদত্যাগের একদফা দাবিতে টানা ৪৫ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অনশন করছে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা। এ অনশনে অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, উপাচার্যের একাধিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, এবং দমনমূলক আচরণ দীর্ঘদিন ধরেই তাদের ভোগাচ্ছে। এদিকে উপাচার্য দাবি করেছেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী আন্দোলনের পক্ষে নয় এবং ক্লাসে ফিরে যেতে চায়। অন্যদিকে, আন্দোলনকারীরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের বৃহৎ অংশ এই দাবিতে একমত এবং তারা পিছু হটার কোনো সুযোগ দেখছেন না।