ক্যাম্পাস প্রতিনিধি, বেরোবি: রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানজিউল ইসলাম জীবন যৌন হয়রানি ও ফলাফল টেম্পারিংয়ের অভিযোগের মুখে ‘পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক’ পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক সাবেক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে ড. তানজিউলের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও ফলাফল পরিবর্তনের অভিযোগ আনেন। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না আসায় তিনি তিনটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ করেন, যা দ্রুতই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে। এর পরপরই একই বিভাগের আরও কয়েকজন সাবেক শিক্ষার্থী তাঁদের হয়রানির অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আড়াল করতে ড. তানজিউল ইসলাম জীবন বিভাগের কিছু বর্তমান শিক্ষার্থী দিয়ে এক প্রতিবাদপত্র প্রকাশ করান। সেখানে অভিযুক্ত পক্ষ যথাযথ প্রমাণ ছাড়া কোনো অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করে এবং অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকে দুই দিনের আল্টিমেটাম দেয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী গণমাধ্যমকে জানান, যৌন হয়রানি ও নম্বর টেম্পারিংয়ের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন 'জিরো টলারেন্স' নীতিতে বিশ্বাসী। তিনি বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্তের জন্য নির্দিষ্ট সেল রয়েছে। ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তাঁদের নাম-পরিচয় গোপন রাখা হবে।"
পরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ই-মেইলের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড. তানজিউল ইসলাম জীবন বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে আমি প্রশাসনিক পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি, যাতে তদন্তে কোনো রকমের বাধা বা প্রশ্ন না ওঠে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশীদ জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে গঠিত তদন্ত কমিটির কাজ পরিচালনার সুবিধার্থে ড. তানজিউল ইসলামের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।