ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লালন শাহ হলের একসময় ‘টর্চার সেল’ হিসেবে পরিচিত কক্ষটি এবার রূপ নিয়েছে জ্ঞানের আলো ছড়ানো এক পাঠাগারে। বুধবার (৭ মে) সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় এই পাঠাগারটির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। ‘ইকরা’ নামক এই গ্রন্থাগারটি স্থাপন করা হয়েছে হলের ৩৩০ নম্বর কক্ষে, যা দীর্ঘদিন ধরে গণরুম ও নির্যাতনের কক্ষ হিসেবে পরিচিত ছিল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ সময় উপস্থিত ছিলেন লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আকতার হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইবি শাখার আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ইবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ইউসুব আলীসহ ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও হলের শিক্ষার্থীরা।
উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে বলেন, “এই ধরনের ছোট্ট পাঠাগারও একটি বড় পদক্ষেপ। এটি শুধু ব্যক্তিগত চেষ্টার ফল নয়, প্রশাসনের সহযোগিতায় এটি বাস্তবায়িত হয়েছে। আমরা আশাবাদী, ভবিষ্যতে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ও আদর্শ পাঠাগারে পরিণত হবে, যা অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে উঠবে।”
অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলের এমন একটি কক্ষে যেখানে একসময় ভয় ও নির্যাতনের ইতিহাস ছিল, সেখানে এখন শিক্ষার্থীরা বই পড়বে, জ্ঞানচর্চা করবে—এটি একটি যুগান্তকারী রূপান্তর। তারা আশা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে এ পাঠাগারটি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠবে।
উল্লেখ্য, ফ্যাসিস্ট শাসনামলে ৩৩০ নম্বর কক্ষটি ছাত্রলীগের টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহৃত হতো। দীর্ঘদিন ধরে এটি গণরুম হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু ২০২৩ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের পর লালন শাহ হলের বর্তমান প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আকতার হোসেন উদ্যোগ নেন কক্ষটিকে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশে রূপ দেওয়ার। তারই ফলশ্রুতিতে আজ সেখানে প্রতিষ্ঠিত হলো পাঠাগার ‘ইকরা’।