আব্দুল্লাহ আল তৌহিদ: নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) নতুন ব্যাচ ভর্তি হলেও বাসের সংখ্যা না বাড়ায় ভোগান্তি বেড়েছে শিক্ষার্থীদের। প্রতিদিন ক্যাম্পাসে যাতায়াতের সময় কম সংখ্যক বাসে গাদাগাদি করে উঠতে হচ্ছে তাদের। এই সময় শিক্ষার্থীরা ঝুলে ঝুলে বাসে আসা-যাওয়ায় বাধ্য হচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুলের তথ্যমতে, বর্তমানে ক্যাম্পাসে ভাড়ায় চালিত ডাবল ডেকার বাস রয়েছে ১৩টি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস রয়েছে ১১টি। তবে এর মধ্যে ২টি বাস দীর্ঘদিন ধরে অচল থাকায় কার্যত ব্যবহৃত হচ্ছে না। ফলে ক্রমবর্ধমান শিক্ষার্থী সংখ্যা সামাল দেওয়ার মতো যথেষ্ট পরিবহন ব্যবস্থা নেই।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে নোবিপ্রবিতে ১৫তম ব্যাচ থেকে শুরু করে ১৯তম ব্যাচ পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে। নতুন করে ২০তম ব্যাচের প্রায় পনেরশো শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাসে যোগ দিয়েছেন।বর্তমানে ক্যাম্পাসে মাস্টার্স করা শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী আছে।কিন্তু শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও বাসের সংখ্যা আগের মতোই থাকায় সমস্যা প্রকট হচ্ছে।
অপরদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছেলেদের ২টি ও মেয়েদের ৩টি আবাসিক হল থাকলেও সিট সংখ্যা শিক্ষার্থীর তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল। তাই অধিকাংশ শিক্ষার্থীই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ১০-১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মাইজদীতে অবস্থান করেন। প্রতিদিন মাইজদী থেকে ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়ার একমাত্র ভরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস। ফলে বাস সংকটের কারণে সকাল-বিকাল শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শেষ নেই।
১৮ ব্যাচের মোহাম্মদ রাকিব নামে এক শিক্ষার্থীরা জানান, “ক্যাম্পাসে আসতে গেলে বাসে সিট পাওয়া যায় নাহ। বাসে জায়গা না থাকায় দাঁড়িয়ে কিংবা ঝুলে আসতে হয়। অনেক সময়তো বাসে উঠার পর্যন্ত যায়গা থাকে না,বাসের দরজার সাথে ঝুলে ঝুলে যাইতে হয়।এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও থেকে যায়।”
১৬ তম ব্যাচের মাহাথির শুভ নামে আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রতি বছরই বাড়ছে। কিন্তু বাস বাড়ানো হচ্ছে না। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর করতে দ্রুত নতুন বাস সংযোজন করুক।”
এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন উপদেষ্টা ড.কাউসার হোসেন বলেন- আমাদের ভাড়ায় চালিত ডাবল ডেকার বাস ১৩ টি,প্রত্যেকটি বাস ৩ বার করে মাইজদি থেকে আসা যাওয়া করে।এছাড়াও আমাদের নিজস্ব সাদা বাসের সংখ্যা ১১ টি, বর্তমানে ৯ টি সাদা বাস প্রয়োজনীয় সংখ্যক বার ট্রিপ দেয়।আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে আমাদের আরোও একটি ডাবল ডেকার বাস এবং আরেকটি সাদা বাস যুক্ত হবে,আশা করি তখন আমরা অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর চাপ সামাল দিতে পারবো।
সংকট কাটিয়ে উঠতে নতুন বাস ক্রয় করার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ রেজুয়ানুল হক বলেন- সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমরা নতুন বাস আপাতত ক্রয় করতে পারছি না।আমরা এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে স্পন্সর হিসেবে বাস নেওয়ার চেষ্টা করতেছি।
ভাড়ায় চালিত বাসের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন- ভাড়া চালিত বাসের সংখ্যা বাড়ালে ইউজিসি কর্তৃক বার্ষিক বাজেটের উপর ব্যায় চলে যায়।আমরা যদি কোনো ভাবে এই সমস্যা সমাধান করতে না পারি তখন আমরা ভাড়ায় চালিত বাস বাড়ানো যায় কিনা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবো।