এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আগামী বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল)। বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষার মাধ্যমে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। যা শেষ হবে (তত্ত্বীয় পরীক্ষা) শেষ হবে ১৩ মে। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত নেওয়া হবে এ পরীক্ষা। তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষে ১৫ মে থেকে ২২ মে পর্যন্ত এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা চলবে। এবারের এসএসসি পরীক্ষা হবে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসে, সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বর ও সময়ে।
এ সময় সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ইয়ানুর রহমান বলেন, পরীক্ষা চলাকালে ১০ এপ্রিল থেকে ১৩ মে পর্যন্ত ৩৪ দিন সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ সময় কোনো ধরনের কোচিং সেন্টার খোলা রাখা যাবে না। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি তদারকি করবে। এসব নির্দেশনা দিয়ে পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
এসএসসি, দাখিল এবং এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষা সুষ্ঠু, সুন্দর ও নকলমুক্ত পরিবেশে আয়োজনে এক পরিপত্রে একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই পরিপত্র সব বিভাগীয় কমিশনার, শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও জেলা প্রশাসকদের পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
এতে বলা হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে সব পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করে আসন গ্রহণ করতে হবে। কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট পর কেন্দ্রে এলে রেজিস্টারে নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও দেরি হওয়ার কারণ উল্লেখ করতে হবে।
দেরিতে আসা পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রতিদিন কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিব সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডকে জানাবেন। তবে যুক্তিসংগত কারণ উল্লেখ করতে না পারলে দেরিতে আসা কোনো পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে না।
মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষা চলার তিন ঘণ্টা পরীক্ষাকেন্দ্রের আশপাশে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। পরীক্ষা চলার সময় কেন্দ্রের আশপাশে ২০০ গজের মধ্যে পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট নন, এমন কোনো ব্যক্তি চলাচল করতে পারবেন না।
কেন্দ্রসচিব ছাড়া পরীক্ষাকেন্দ্রে অন্য কেউ মোবাইল ফোন, মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবে না বলেও পরিপত্রে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় বলছে, কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিব ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাবিহীন একটি সাধারণ (ফিচার) ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। অননুমোদিত ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
ট্রেজারি-থানা বা নিরাপত্তা হেফাজত থেকে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক ও কর্মচারীকে ফোন ব্যবহার না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ওই পরিপত্রে। একই সঙ্গে প্রশ্নপত্র বহন কাজে কালো কাচযুক্ত যানবাহন ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় বলছে, প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) নিয়োগ দিতে হবে। ট্রেজারি, থানা বা নিরাপত্তা হেফাজত থেকে কেন্দ্রের কেন্দ্রসচিব বা তাঁর মনোনীত প্রতিনিধি ট্যাগ অফিসারসহ প্রশ্নপত্র গ্রহণ করে পুলিশ প্রহরায় কেন্দ্রে নিয়ে যাবেন। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) উপস্থিত না থাকলে প্রশ্নপত্র ট্রেজারি, থানা বা নিরাপত্তা হেফাজত থেকে বের করা বা বহন করা যাবে না।
‘নিরাপত্তা হেফাজত থেকে পরীক্ষার কেন্দ্রে বহুমুখী নির্বাচনী প্রশ্নসহ রচনামূলক ও সৃজনশীলের সব সেট প্রশ্নই কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে’ জানিয়ে মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, প্রশ্নের সেট কোড পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে জানানো হবে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সেট কোডে পরীক্ষা নিতে হবে। কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার), কেন্দ্রসচিব এবং পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতি ও স্বাক্ষরে নির্ধারিত সেট কোড নিশ্চিত হয়ে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে।
অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষা দেরিতে শুরু করতে হলে ‘যত মিনিট পরে পরীক্ষা শুরু হবে, পরীক্ষার্থীদের সে সময় থেকে যথারীতি প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত নির্ধারিত সময় দিতে হবে’ বলেও জানানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে।