ছয় দফা দাবিতে কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছেন সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লার কোটবাড়ি মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। সড়ক অবরোধের কারণে উভয়মুখী যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো :
১. জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের জন্য নির্ধারিত ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল, তাদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট থেকে বাতিল এবং বিতর্কিত নিয়োগবিধি সংশোধন ও ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরি বাতিল।
২. ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল, উন্নত বিশ্ব অনুযায়ী মানসম্পন্ন চার বছর মেয়াদি কারিকুলাম চালু ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ধাপে ধাপে ইংরেজি মাধ্যমে রূপান্তর।
৩. উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশল পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে তাদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪. কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এসব পদে অবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
৫. স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।
৬. পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে একটি উন্নত মানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক পাস শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস চালু করতে হবে। ডুয়েটের আওতাভুক্ত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকেই শতভাগ সিটে ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের আহাদ বলেন, রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল করতে হবে। বিতর্কিত নিয়োগবিধিও সংশোধন করতে হবে। না হলে আমাদের আন্দোলন চলবে।
আরেক শিক্ষার্থী তানভীর বলেন, ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করতে হবে। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করাসহ ছয় দফা বাস্তবায়নের জন্য আমরা এ লড়াই চালিয়ে যাব।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেফাঈ আবিদ বলেন, শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেছেন। এর আগেও এ ছয় দফা দাবিতে তারা সড়কে নেমেছিলেন। আজও একই দাবিতে অবস্থান নিয়েছেন। আমরা তাদের বুঝিয়েছি। যেহেতু বিষয়টি হাইকোর্টের এখতিয়ারভুক্ত, তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হাইকোর্টই দেবে। রাস্তা অবরোধ না রাখতে আমরা তাদের অনুরোধ করেছি। আশা করি, তারা বুঝে সড়ক ত্যাগ করবে।