দেশের শিক্ষার্থীদের পেশাগত ও কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি, ইন্ডাস্ট্রি-অ্যাকাডেমিয়া সংযোগ শক্তিশালীকরণ এবং পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এনএসডিএ) এবং দেশের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চারটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর হয়েছে। আগারগাঁওয়ে অবস্থিত এনএসডিএ’র সভাকক্ষে শনিবার (৩ মে) এ সমঝোতা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি)।
নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন, এনএসডিএ নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরীন আফরোজ, বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান, রুয়েটের ডিন অব এএসই অধ্যাপক মো. আব্দুল কাদের জিলানী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া। এনএসডিএর নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) নাসরীন আফরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার এবং এনএসডিএ ও ইন্ডাস্ট্রি স্কিলস কাউন্সিলের (আইএসসি) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে সমঝোতা স্মারক গুলোর আওতায় শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন শর্টকোর্স, পেশাদার কোর্স, কর্মক্ষেত্রের উপযোগী দক্ষতা প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বিষয়ক সচেতনতা মূলক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। পাশাপাশি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাকরির বাজার জরিপ, সেক্টর ভিত্তিক মানবসম্পদ চাহিদা পর্যালোচনা এবং চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এনএসডিএ এবং সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের যৌথ প্রচেষ্টায় দেশের দক্ষতা ইকো-সিস্টেম আরও সমৃদ্ধ হবে।
শিক্ষার্থীদের জন্য কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ন এবং দক্ষতা সনদের আয়োজন করা হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরিচালিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গ্লোবাল চাকরির বাজারের জন্য প্রস্তুত করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কম্পিটেন্সি স্ট্যান্ডার্ড ও কারিকুলাম উন্নয়ন, শিক্ষকদের টিওটি (ট্রেনিং অব ট্রেইনারস) এবং মাস্টার ট্রেইনার গঠনের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও গ্রহণ করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া ‘থ্রি-জিরো’ তত্ত্ব বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, দেশের জনশক্তিকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারলে জনশক্তি রপ্তানির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এবং জনমিতিক লভ্যাংশ অর্জনে তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর তিনি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
এ সময় তিনি জাপানি ভাষায় দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের দেশের অসংখ্য তরুণ সম্প্রতি জাপানি ভাষায় দক্ষতা অর্জন করে বিভিন্ন সেক্টরে কাজের সুযোগ তৈরি করেছে।’
এনএসডিএর নির্বাহী চেয়ারম্যান নাসরীন আফরোজ বলেন, এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে এনএসডিএ এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় হবে। দেশের মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।